চীনে ভূমিকম্পে নিহত ১২৮জন, মাইনাস ১৩ ডিগ্রিতেই চলছে উদ্ধার তৎপরতা

মীযান ডেস্ক: মাঝরাতে আতঙ্ক। ভয়াবহ ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল চিন। ঘুমের মধ্যেই চলে গেল বহু প্রাণ। তাসের ঘরের মতো হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল বহু বাড়িঘর। প্রকৃতির ভয়ানক রোষে এখনও পর্যন্ত অন্তত ১২৮ জন নিহত হয়েছে বলে খবর। জানা গিয়েছে, সোমবার গভীর রাতে উত্তর-পশ্চিম চিনের গানসু এবং কিংহাই প্রদেশের বেশকিছু এলাকা কেঁপে ওঠে। ফলে অনেক বহুতল তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়েছে। দুই প্রদেশ মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ১২৮। আহত বহু। ধ্বংসস্তূপের নীচে যারা আটকে পড়েছেন তাঁদের উদ্ধারে কাজ শুরু করে দিয়েছেন উদ্ধারকারীরা। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

এমনিতেই মাইনাস ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস চলছে সেখানে। কনকনে ঠাণ্ডায় হাড় হিম করা শীতল আবহাওয়ার মধ্যেই চলছে ত্রাণ, উদ্ধার ও পুনর্বাসনের তৎপরতা। প্রতিকূল পরিবেশের কারণে উদ্ধারকারীদের বেগ পেতে হচ্ছে। সোমবার রাত ১২টা নাগাদ দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় গানসু প্রদেশের জিসিশান কাউন্টি এলাকায় এই ভূমিকম্প আঘাত হানে। রিখটার স্কেলে মাত্রা ছিল ৬.২। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল গানসু প্রদেশের রাজধানী লানঝৌ থেকে ১০০ কিমি দূরে মাটি থেকে মাত্র ১০ কিমি গভীরে। উদ্ধার তৎপরতায় যুক্ত আছেন ফায়ার সার্ভিস, সেনাবাহিনী ও পুলিশের সদস্যরা। তাঁরা ভূমিকম্পে আহত, নিহত ও বেঁচে থাকা লোকদের সন্ধান করছেন।

প্রথম ভূমিকম্পটি আঘাত হানার পরেও একাধিক পরাঘাত বা আফটার শক হয়েছে। চীনের সমগ্র উত্তরাঞ্চলেই তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে নেমে গেছে। এছাড়াও তীব্র ঠাণ্ডায় কাঁপছে দেশটির অধিকাংশ অঞ্চলই। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জিনহুয়া জানিয়েছে, চীনের শানশি, হেবেই ও লিয়াওনিং প্রদেশে সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড হয়েছে। হিমশীতল তাপমাত্রা উপেক্ষা করেই কাজ করছেন উদ্ধারকারীরা। তবে অধিকাংশ এলাকাই বরফে ঢাকা থাকায় উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে।

ভূমিকম্পের কারণে যোগাযোগ ও পরিকাঠামোয় বিস্তর ক্ষতি হয়েছে। বহু এলাকা বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। জলের পাইপ ফেটে গিয়েছে। এহেন বিপর্যয়ের মোকাবিলায় সমস্ত শক্তি নিয়োগ করার বার্তা দিয়েছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। বিপর্যস্ত দুই প্রদেশের সরকারি অফিসারদের জরুরি ভিত্তিতে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় পৌঁছে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। উদ্ধারকাজে কোনও ত্রুটি যেন না থাকে তা নিশ্চিত করার কথাও বলেছেন শি। আহতদের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছেন চিনের প্রিমিয়ার লি কিয়াং।

গত বছরও বিধ্বংসী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছিল চিন। সেবার ভয়ংকর ভূমিকম্প হয় সিচুয়ান প্রদেশের কাংডিংয়ে। মাত্রা ছিল ৬.৬। প্রাণ হারিয়েছিলেন শতাধিক মানুষ। ২০০৮ সালে সিচুয়ানের ওয়েনচুয়ানে ভয়াবহ ভূমিকম্পে প্রাণ হারিয়েছিলেন অন্তত ৮ হাজার মানুষ। সেবার কম্পনের মাত্রা ছিল ৮।

Stay Connected

Advt.

%d bloggers like this: