মীযান ডেস্ক: পৃথিবীর অন্যতম শক্তিশালী গোয়েন্দা সংস্থা ইজরায়েলের মোসাদ। সেই কুখ্যাত মোসাদের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি এবং বিদেশি নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করার কাজে লিপ্ত ছিল। খুব গোপনীয়তার সঙ্গে তারা এসব কর্মকাণ্ড চালাচ্ছিল। এমনই অভিযোগে সন্দেহভাজন ৩৩ জনকে আটক করেছে তুরস্কের পুলিশ। মঙ্গলবার ২ জানুয়ারি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
গত মাসেই ইজরায়েলকে সতর্ক করে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়ব এরদোগান বলেছিলেন, তুরস্ক-সহ ফিলিস্তিনের বাইরে অবস্থানরত হামাস সদস্যদের উপর হামলার চেষ্টা করলে পরিণতি ভয়াবহ হবে। তিনি আরো বলেছিলেন, ইজরায়েলের এ ধরনের পদক্ষেপ হবে মারাত্মক ভুল। তার কঠোর পরিণতি হবে, যা ইজরায়েলের জন্য ব্যুমেরাং হবে। বিরাট মাশুল দিতে হবে নেতানিয়াহুকে।
ইস্তাম্বুলের সন্ত্রাসবিরোধী ব্যুরোর পুলিশ আটটি অঙ্গরাজ্যের ৫৭টি জায়গায় একযোগে অভিযান চালায়। গ্রেফতারের বিষয়ে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জানতে চাওয়া হলে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। কোনো সূত্রের উল্লেখ না করে প্রতিবেদনে বলা হয়, সন্দেহভাজন ব্যক্তিরা ‘আন্তর্জাতিক গুপ্তচরবৃত্তির’ অংশ হিসেবে তুরস্কে অবস্থান করা বিদেশি নাগরিকদের চিহ্নিত, পর্যবেক্ষণ, হামলা ও অপহরণ করার পরিকল্পনা করছিল।
গাজায় ইসরায়েলের চলমান বোমাবর্ষণ নিয়ে বরাবরই নিন্দা জানিয়ে আসছে তুরস্ক। এনিয়ে এরদোগান ও ইজরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর মধ্যে প্রকাশ্যেই উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়েছে। নেতানিয়াহুকে কসাই পর্যন্ত বলেছেন এরদোগান।
তুর্কি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলি ইয়েরলিকায়া বলেন, অভিযানে দেড় লাখ ইউরো-সহ বিপুল পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা, অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ও অন্যান্য ডিজিটাল বস্তু জব্দ করেছে পুলিশ। জানা যায়, ৩৩ জন আটকের পর আরও ১৩ সন্দেহভাজন পলাতককে খুঁজছে পুলিশ। অভিযানের সময় পুলিশের ঘরে ঘরে তল্লাশি, সন্দেহভাজনদের হাতকড়া পরানো ও তাদের পুলিশের গাড়িতে তোলার ভিডিও প্রকাশ করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, গত মাসে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল প্রকাশিত এক রিপোর্টে বলা হয় ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তুরস্ক সহ মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে হামাস নেতাদের হত্যা করার জন্য কাজ করছে। এর কয়েকদিন পরই একটি ইসরায়েলি সংবাদ মাধ্যম দেশটির সামরিক বাহিনীর এক কর্মকর্তার ফোনালাপ ফাঁস করে। যেখানে তিনি কাতার, তুরস্ক এবং লেবানন সহ বিশ্বের ‘প্রতিটি স্থানে’ হামাসের নেতাদের হত্যার ব্যাপারে ইসরায়েলের পরিকল্পনার কথা বলেন। তুরস্কসহ বেশ কয়েকটি আরব ও মুসলিম দেশে হামাসকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে ধরা হয় না।