আত্মহত্যায় ৫৬ বছরের রেকর্ড ব্রেক, ২০২২ সালে দেশে আত্মাহুতি দিয়েছে দেড় লক্ষাধিক: রিপোর্ট

মীযান ডেস্ক: ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (এনসিআরবি)-র পরিসংখ্যান মোতাবেক, ২০২২ সালে দেশজুড়ে আত্মহত্যা করেছেন ১ লক্ষ ৬৪ হাজার ৩৩ জন। এনসিআরবি-র ৫৬ বছরের নথিতে এই সংখ্যা সর্বোচ্চ। ১৯৬৭ সাল থেকে দেশে আত্মহত্যার পরিসংখ্যান নথিবদ্ধ রাখছে এই কেন্দ্রীয় সংস্থাটি। তাদের রিপোর্টই বলছে, ২০২১ সালের তুলনায় গত বছরে আত্মহত্যা বৃদ্ধির হার বেশি। এবং যা বিগত সাড়ে ৫ দশকের মধ্যে সর্বাধিক। গত বছরের তুলনায় প্রায় ৭.২ শতাংশ হারে বেড়েছে আত্মাহুতি। এই পরিসংখ্যান যথেষ্ট উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন মনোবিজ্ঞানীরা।

রবিবার ১০ সেপ্টেম্বর বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবসে সচেতনতা প্রচারের এক অনুষ্ঠানে এনসিআরবি-র রোমহর্ষক এই রিপোর্ট সামনে এসেছে। দেশের যে পাঁচ রাজ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি, তার মধ্যে নাম রয়েছে পশ্চিমবঙ্গেরও। এছাড়াও এই তালিকায় রয়েছে মহারাষ্ট্র, তামিলনা‌ড়ু, মধ্যপ্রদেশ ও কর্ণাটক। এনসিআরবি-র রিপোর্ট বলছে, দেশজুড়ে আত্মহত্যার মধ্যে অর্ধেকই হয় এই পাঁচ রাজ্যে। ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সিদের মধ্যে এই প্রবণতা প্রায় ৭০ শতাংশ। এর অন্যতম কারণ মূলত পারিবারিক কলহ, পরকীয়া সম্পর্ক, ত্রিকোণ প্রেম বা বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ইত্যাদি। এছাড়াও হতাশা, মানসিক অস্থিরতা, বিকার ইত্যাদিও নেপথ্যে থাকে। আবার স্কুল-কলেজ পড়ুয়াদের মধ্যে ইদানীং আত্মহত্যার প্রবণতা মারাত্মকভাবে বেড়েছে। দেশে প্রতিদিন গড়ে দু-একজন করে পড়ুয়া আত্মঘাতী হন।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের শুরুতেই ১০০ ডায়ালে একটি সুইসাইডের চেষ্টার খবর পেয়েছিল কলকাতা পুলিস। তারপর ঘটনাস্থলে দ্রুত পৌঁছে এক তরুণীকে বাঁচায় সরশুনা থানার পুলিশ। সেই প্রচেষ্টায় সফল হওয়ার জন্য এদিনের অনুষ্ঠানে তাঁদের প্রত্যেককে বিশেষভাবে সম্মানিত করা হয়। সুইসাইড সচেতনতায় সংশ্লিষ্ট সংগঠনের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে কলকাতা পুলিস। চালু করা হয়েছে বিশেষ টোল-ফ্রি নম্বর ৯০৮৮০৩০৩০৩। কেউ মানসিক অবসাদে ভুগলে এই নম্বরে ফোন করবেন। তাঁকে অবসাদ থেকে মুক্তির পথ বাতলে দেওয়া বলে জানিয়েছে লালবাজার। সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ২০২২ সালে এই ধরনের ফোন এসেছিল ৬১২৫টি। তবে চলতি বছরের প্রথম ছ’মাসেই ফোনের সংখ্যা ৪ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে।

Share :

Stay Connected

Advt.

%d bloggers like this: