বদলে যাবে ভূগোল, জলের নীচে নতুন মহাদেশ আবিষ্কার, ৩৭৫ বছর পর অষ্টম মহাদেশের সন্ধান


মীযান ডেস্ক: পাঁচটি মহাসমুদ্র। সপ্তম আশ্চর্য। সাত মহাদেশ। এসবই চিরকালীন সত্য। অর্থাৎ যা কোনওভাবেই বদলানোর নয়। এতদিন এমনটাই লেখা থাকত পাঠ্য বইয়ে। তবে প্রকৃতির মধ্যে কতশত রহস্য যে ছড়িয়ে বা লুকিয়ে রয়েছে তা বলা ভার। এবার তেমনই এক নতুন রহস্যের খোঁজ মিলল প্রশান্ত মহাসাগরের গভীরে। বিজ্ঞানীরা যার জন্য দীর্ঘকাল ধরে সন্ধান চালিয়েছেন, অবশেষে খোঁজ মিলল সেই অষ্টম মহাদেশের। সমুদ্রের নীচে সেই আস্ত নতুন মহাদেশের নাম জিল্যান্ডিয়া।

বিজ্ঞানীদের দাবি, প্রায় তিনশো কোটি বছর আগে পৃথিবীর মানচিত্রে দেখা যেত জিল্যান্ডিয়াকে। তবে প্রায় কুড়ি কোটি বছর আগে গন্ডোয়ানাল্যান্ড ভাগ হওয়ার সময় জিল্যান্ডিয়া চলে যায় মহাসমুদ্রের গভীরে। ফলে মানচিত্র থেকেই মুছে যায় চিরতরে। তবে ভূ-বিজ্ঞানীরা এই নিয়ে গবেষণা চালিয়েছেন দীর্ঘদিন। আর অবশেষে খোঁজ মিলেছে হারিয়ে যাওয়া জিল্যান্ডিয়ার।

দীর্ঘ ৩৭৫ বছর পর আবিষ্কৃত হল এই নতুন মহাদেশ। ফলে ৭ থেকে মহাদেশের সংখ্যা বেড়ে হল ৮। অথচ সাদা চোখে একে এতকাল দেখা যায়নি। কিন্তু তা বলে যে এই মহাদেশের ব্যাপারে সব রহস্য মোচন হয়ে গিয়েছে তা-ও নয়। আসলে সাসপেন্স বা রহস্যই এই সদ্য আবিষ্কৃত মহাদেশের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ। স্যাটেলাইটের দৌলতে ইন্টারনেটে ইতিমধ্যেই পৃথিবীর মানচিত্রে নতুন এই মহাদেশের অবস্থান দেখানো শুরু হয়েছে। এ সম্পর্কে অনেক রকম তথ্যও জানতে পারছে মানুষ। আগামী দিনে হয়ত পাঠ্যবইয়েও সংযোজন হবে জিল্যান্ডিয়া মহাদেশ। বদলে যাবে ইতিহাস এবং ভূগোল দুই-ই।

নতুন এই মহাদেশের আয়তন প্রায় ৫০ লক্ষ বর্গকিমি। তবে তার ৯৪ শতাংশই জলের নিচে। অর্থাৎ এখনও পর্যন্ত যতখানি আবিষ্কার হয়েছে সেই অর্থে বলা যায় গোটা মহাদেশটাই এখন হিমশৈলের চূড়া মাত্র। তবে এখনও গবেষণার অনেককিছু বাকি রয়েছে। ইতিমধ্যেই সেখানকার পাথর ও মাটির নমুনা নিয়ে পরীক্ষা শুরু হয়েছে। তাঁদের একাংশের দাবি, এই অংশের সঙ্গে মিল রয়েছে নিউজিল্যান্ডের। অন্য একপক্ষের মতে, জিল্যান্ডিয়ায় কোনও ম্যাগনেটিক অ্যানোম্যালিস নেই। সেই হিসেবে এর সঙ্গে নিউজিল্যান্ডের তুলনা টানা উচিত নয়।

আজ থেকে প্রায় ১২৫ বছর আগে জিল্যান্ডিয়ার খোঁজ প্রথম দেন স্কটিশ প্রকৃতিবিদ ও ভূতত্ত্ববিদ স্যর জেমস হেক্টর। যিনি ১৮৯৫ সালে নিউজিল্যান্ডের দক্ষিণ উপকূল থেকে অনেক দূরের এক সমুদ্রাভিযানে অংশ নিয়েছিলেন। সর্বপ্রথম তাঁরই গোচরে আসে, এক অচেনা ভূখণ্ড, যা আজও মানুষের জানার বা জ্ঞানের বাইরে। তিনি এ বিষয়ে প্রাথমিক গবেষণাপর্ব সমাধা করে লিখেছিলেন, জলের তলায় ডুবে থাকা সুদূর দক্ষিণ ও পূর্বে বিস্তৃত এই ভূখণ্ডটি কোনও পর্বত-শৃঙ্খলের ধ্বংসাবশেষ এবং এর থেকেই এই মহাদেশের জন্ম।

Stay Connected

Advt.

%d bloggers like this: