সিরীয় প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করল ফ্রান্স

মীযান ডেস্ক:  এক দশকের পুরোনো এক মামলায় সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের নামে আন্তর্জাতিক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে ফ্রান্স। জানা গিয়েছে, ২০১৩ সালে সিরিয়ার বাশার আল-আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে ভয়াবহ অভিযোগ উঠেছিল। অভিযোগ ছিল, আসাদের নির্দেশে সরকার বিরোধীদের ওপর রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করেছে। সেই মামলার তদন্ত শেষে ফ্রান্স এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আসাদের নামে আন্তর্জাতিক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। সিরিয়ার আরও তিন নাগরিকের বিরুদ্ধেও একই পরোয়ানা জারি হয়েছে। বাকি তিনজনের একজন হলেন প্রেসিডেন্ট আসাদের ভাই মাহেল, তিনি সিরিয়ার এলিট ফোর্সের প্রধান। বাকি দুইজনও রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগের সঙ্গে যুক্ত। উল্লেখ্য, ২০১১ সালে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। যাতে প্রচুর বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন। ২০১৩ সালে তাদের বিরুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগের অভিযোগ ওঠে।

আন্তর্জাতিক আদালতে আসাদ এবং তার সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের মামলা ওঠে। তেমনই এক মামলায় আসাদকে দোষী প্রমাণিত করা হয়েছে। তারপরেই তার নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে ফ্রান্স। এটি আসাদের বিরুদ্ধে প্রথম গ্রেপ্তারি পরোয়ানা।

২০১৩ সালের অগাস্ট মাসে সিরিয়ার বিরোধীপক্ষের এক নেতা ইউটিউবে একটি ভিডিও পোস্ট করেন। সেখানে তিনি দেখান সিরিয়ার পূর্বদিকের শহর ঘোউটায় রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের পর গোটা এলাকার কী অবস্থা হয়েছে। বহু দেহ চারিদিকে ছড়িয়ে থাকতে দেখা যায় ওই ভিডিওতে। যার মধ্যে বহু শিশু ছিল। ওই ভিডিও গোটা বিশ্বে আলোড়ন ফেলে দেয়। রাষ্ট্রসংঘের রিপোর্টে বলা হয়, ভিডিও থেকে স্পষ্ট, সেখানে রাসায়নিক গ্যাস ব্যবহার করা হয়েছে। আসাদ সরকার যদিও প্রথম থেকেই এমন অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

বিশেষজ্ঞদের অভিযোগ, ফ্রান্সও তো ঔপনিবেশিক শাসনকালে বহু মুসলিম দেশের ওপর কার্যত গণহত্যা চালিয়েছে। বহু যুগ কেটে গেলেও এখনও সেই বর্বরোচিত ও পাশবিক জুলুমের জন্য ক্ষমা পর্যন্ত চায়নি। তারা তো নিজেদের মানবতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধের দায়ে নিজেদেরকে কাঠগড়ায় তোলেনি। যত মোড়লী ও দাদাগিরি শুধু মুসলিম দেশগুলোর ওপর। নিজ দেশের কথা বাদ দিলেও ব্রিটেন, আমেরিকা, রাশিয়া, জার্মানি কিংবা ইজরায়েলের কোনও অপরাধ কি ফ্রান্সের চোখে পড়ে না? এইদেশগুলো তো দুটো বিশ্বযুদ্ধ থেকে শুরু করে কয়েক ডজন যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়েছে বিশ্বের ওপর। কোটি কোটি মানুষকে তারা পাইকারি হারে হত্যা করেছে। কই সেসব নিয়ে তো তাদের কোনও মাথাব্যথা নেই। সিরিয়ার সরকার যদি নিজ দেশের নাগরিকদের ওপর রাসায়নিক বোমা ফেলে থাকে, তার জন্য সে দেশের আদালত বিচার করবে। ফ্রান্সকে সিরিয়ার বিচার করার অধিকার কে দিয়েছে? ফ্রান্স কি আন্তর্জাতিক আদালত নাকি – এসব প্রশ্ন তুলেছেন বিশেষজ্ঞরা।

Stay Connected

Advt.

%d bloggers like this: