তিন রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী বাছতে হিমশিম খাচ্ছে বিজেপি, কমিটি গড়লেন মোদি-শাহরা

মীযান ডেস্ক: সদ্য সমাপ্ত পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস এক এবং বিজেপি তিন রাজ্যে জয়ী হয়েছে। ইতিমধ্যেই তেলেঙ্গানায় মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে কংগ্রেস নেতা অনুমুলা রেবন্ত রেড্ডি শপথ নিয়েছেন। কিন্তু ৬ দিন কেটে গেলেও বিজেপি এখনও তিন রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী ঠিক করে উঠতে পারেনি। সূত্রের খবর, প্রবল গোষ্টী কোন্দলে জেরবার বিজেপি। তাই তিন রাজ্যে জিতেও এখনও মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন, তা ঠিক করা সম্ভব হয়নি। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিশেষ কমিটি গড়েছে গেরুয়া শিবির। বিরোধীরা বলছে, এখন বিজেপি দলেও মোদির সিদ্ধান্তই আর শেষ কথা নয়। এই প্রথম  দলে ‘মোদিই শেষ কথা’ – এই মিথ ভেঙে যাচ্ছে বিজেপির অন্দর মহলে। মোদির কথায় তিন রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী পদে দাবিদাররা নিজেদের দাবি থেকে সরে আসছেন, এরকম কিন্তু হচ্ছে না। রাজস্থানে বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়া, মধ্যপ্রদেশে শিবরাজ সিং চৌহান ও ছত্তিশগড়ে রামন সিং কেউ দাবি ছেড়ে দিচ্ছেন না। তাই এই বিলম্ব।

সবাইকে তুষ্ট করে, বুঝিয়ে সুঝিয়ে শান্ত করার চেষ্টা হচ্ছে। ড্যামেজ কন্ট্রোলে নেমেছে চানক্যরা। উদ্দেশ্য একটাই। দলে সম্ভাব্য বিদ্রোহ ঠেকানো। শুক্রবারই তিন রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী ঠিক করতে পর্যবেক্ষক ঠিক করা হয়েছে। রাজস্থানে পর্যবেক্ষক করা হয়েছে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, বিনোদ তাওড়ে ও সঞ্জয় পান্ডেকে। মধ্যপ্রদেশের পর্যবেক্ষক হয়েছেন হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর, কে লক্ষ্মণ ও আশা লাকড়া। ছত্তিশগড়ের পর্যবেক্ষক হয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অর্জুন মুন্ডা, সর্বানন্দ সোনওয়াল ও দুষ্যন্ত গৌতম। বিধায়কদের সঙ্গে কথা বলে এই পর্যবেক্ষক টিম তাদের রিপোর্ট জমা দেবে।

কিন্তু কোন রাজ্যে কে হবেন মুখ্যমন্ত্রী? বিধায়কদের মধ্যে থেকেই কেউ হবেন? নাকি কোনদ্ল এড়াতে নতুন মুখ আনা হবে? এ প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় সংসদ বিষয়কমন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশি বলেছেন, বিধায়করাই মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেন। আবার নতুন কেউ মুখ্যমন্ত্রী হয়ে পরে জিতে বিধায়ক হয়ে আসবেন, এরকমও হতে পারে। অর্থাৎ সোজা কথায়, তিনি কোনও সম্ভাবনাকেই বাদ রাখছেন না। প্রহ্লাদ যোশি বলেছেন, বিধায়কদের সঙ্গে কথা বলেই চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব ও পর্যবেক্ষক কমিটি। আজ-কালের মধ্যেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়ে যাবে বলে আশাবাদী তিনি। তবে যোশি স্পষ্ট না বললেও জানা যাচ্ছে, আজ কিংবা আগামী কাল দুই দফায় বিধায়ক দলের সঙ্গে তিন বিজেপি পর্যবেক্ষক কথা বলে শীর্ষ নেতৃত্বকে রিপোর্ট দেবেন। তারপর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হবে। পর্যবেক্ষকদের কি মোদি এবং অমিত শাহের পছন্দ-অপছন্দের নাম বলে পাঠানো হয়েছে? নাকি তাঁরা শুধুই বিধায়ক দলের সঙ্গে কথা বলে রিপোর্ট করবেন? এই নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। কিন্তু এত দেরি কেন হচ্ছে, এই নিয়ে বিজেপির অন্দরেই প্রশ্ন উঠছে।

এদিকে, রাজস্থানে স্বামী বালকনাথকেই মুখ্যমন্ত্রী করতে চাইছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। গোরখপুর মঠের মোহন্ত যোগীর বিশেষ অনুগামী হিসেবে পরিচিত বালকনাথ। রাজস্থানের নির্বাচনী প্রচারে বালকনাথের হয়ে প্রচার করতেও গিয়েছিলেন আদিত্যনাথ। যোগীর অনুগামী বিজেপি নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা প্রকাশ্যে দাবি করছেন, রাজস্থানেও সন্ন্যাসীর শাসন দরকার। যোগী আদিত্যনাথ কি বালকনাথকে কুর্সিতে বসিয়ে ধীরে ধীরে আগামী দিনের জন্য নিজের টিম বা লবি তৈরি করছেন জাতীয় স্তরে? এমন জল্পনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

Stay Connected

Advt.

%d bloggers like this: