মীযান ডেস্ক: সংসদের নিরাপত্তা যে বজ্র আঁটুনির ফস্কা গেরো, সেটা প্রমাণ হয়ে গেছে বুধবার। সংসদীয় গণতন্ত্রের পীঠস্থান পার্লামেন্টের মতো জায়গায় নিরাপত্তাজনিত সেই পাহাড়প্রমাণ বিচ্যুতির জন্য ঘুরিয়ে মোদি সরকারের নীতিকেই কাঠগড়ায় তুললেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। তাঁর দাবি, সংসদে যে নিরাপত্তার অভাব প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে, তার জন্য দায়ী দেশজুড়ে বেলাগাম বেকারত্ব। এই বেকার সমস্যা তৈরিই হয়েছে মোদির ভ্রান্ত ও চমকপ্রদ নীতির জন্য। সংসদে হামলার চক্রীরা শুরু থেকেই দাবি করে আসছে, তারা জঙ্গি নন, শিক্ষিত বেকার। এই বার্তা দিতেই সংসদে গ্যাস হানার পথ বেছে নিয়েছে তারা। কোনও নাশকতা ঘটানোর ছক থাকলে তাঁরা আপাত নিরীহ স্মোক ক্যান নিয়ে সংসদে ঢুকত না। আসলে এই সংসদ হামলার চক্রীরা সকলেই ভগৎ সিং ফ্যান ক্লাবের সদস্য। সম্ভবত সেকারণেই ভগৎ সিংয়ের অনুকরণে সরকার এবং সংবাদমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইছিল তারা।
রাহুল গান্ধীর মুখেও সেই সুরই প্রতিধ্বনিত হল। কংগ্রেস নেতা রাহুল বলেছেন, সত্যিই সংসদের নিরাপত্তায় বড় রকমের বিচ্যুতি ধরা পড়েছে। কিন্তু প্রশ্নটা হল, কেন এই হামলা হল? আসল সমস্যা হল বেকারত্ব। তার জন্য দায়ী মোদিজির ভুল পলিসি। শিক্ষিত যুবসমাজ কাজ পাচ্ছে না। রাহুলের সাফ কথা, মোদির ভ্রান্ত নীতির জন্যই দেশে বেকারত্ব এবং মুদ্রাস্ফীতি হু হু করে বাড়ছে। আর পরোক্ষে সেটাই সংসদে গ্যাস হামলার জন্য দায়ী।
কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গেও মোদি সরকারকে এ নিয়ে কাঠগড়ায় তুলছেন। তাঁর দাবি, প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ভয়ে সংসদমুখো হচ্ছেন না। যতদিন না তাঁরা এ নিয়ে বিবৃতি দিচ্ছেন, আন্দোলন চলবে।
অন্যদিকে দেশে অরাজকতা ছড়িয়ে দিতে চেয়েছিল হানাদাররা। চাপে পড়ে সরকার যাতে তাদের দাবি মেনে নেয়, সেটাই ছিল মূল উদ্দেশ্য। সংসদ হানায় মূল অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আদালতে এমনটাই জানাল দিল্লি পুলিস। এই ষড়যন্ত্রের পিছনে বিদেশী শক্তির ইন্ধন ও পৃষ্ঠপোষকতাও থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তাই পুলিস এই দিকটিও তাই খতিয়ে দেখছে। এমনকী জঙ্গি সংগঠনগুলির মদত থাকার বিষয়টিও উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না বলে আদালতে জানিয়েছে পুলিস। শুধু তাই নয়, অধিবেশন কক্ষের ভিতর হানাদারদের গায়ে আগুন লাগানোরও পরিকল্পনা ছিল তাদের। যাতে আগুন লাগার পরও তারা আহত না হয়, তাই বিশেষ এক প্রকার জেল ব্যবহার করতে চেয়েছিল তারা। যদিও এই পরিকল্পনা শেষে ভেস্তে যায়।