মীযান ডেস্ক: মঙ্গলবার দিল্লিতে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’-র বৈঠকে তাদের সম্মিলিত প্রধানমন্ত্রীর মুখ হিসেবে কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গের নাম প্রস্তাব করলেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী। গেরুয়া শিবিরের টেনশন বাড়াতে নিলেন আরও এক নয়া রণকৌশল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বিতীয় প্রস্তাব—প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের প্রার্থী হোক প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। একযোগে এই দুই প্রস্তাব দিয়ে বৈঠকে উপস্থিত শরিক দলের নেতাদের উদ্দেশ্যে মমতার তৎক্ষণাৎ প্রশ্ন, এরকমটা হলে কেমন হবে?
বুধবার এনসিপি সুপ্রিমো শারদ পাওয়ার জানিয়েছেন, এক চমকপ্রদ ভাবনা হিসেবেই মোদির বিরুদ্ধে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর নাম বলেছেন মমতা। কংগ্রেস অবশ্য প্রাথমিকভাবে এই প্রস্তাবে রাজি নয় বলেই এআইসিসি সূত্রে খবর। কারণ, আর যাই হোক দু’বারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এবং বিশেষ করে বারাণসীর মতো হিন্দুদের আধ্যাত্মিকতার প্রাণকেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদি অত্যন্ত শক্তিশালী প্রার্থী। বর্তমান পরিস্থিতিতে সেখানে তাঁর মোকাবিলা করা বেশ কঠিন। ২০১৪ সালে ওই কেন্দ্র থেকে লড়েছিলেন আম আদমি পার্টি সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়াল। হেরেছিলেন ৩ লক্ষ ৭১ হাজার ৭৮৪ ভোটে। এবার কংগ্রেস-সপা-বিএসপি একজোট না হলে ব্যবধান আরও বাড়তে পারে।
তবে মমতার প্রস্তাব দুটি যে বেশ চমকপ্রদ এবং গুরুত্বপূর্ণ, সেকথা অস্বীকার করছে না ‘ইন্ডিয়া’র কেউই। কারণ, প্রিয়াঙ্কার মুখে তাঁর ঠাকুরমা প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর হুবহু আদল রয়েছে। মানুষের মধ্যেও সোনিয়া-তনয়া যথেষ্ট জনপ্রিয়। উত্তরপ্রদেশে তিনি দলের হয়ে কাজও করে চলেছেন অনেক বছর ধরে। ফলে প্রিয়াঙ্কা প্রার্থী হলে লড়াই জমজমাট হবে বলে মত রাজনৈতিক মহলের।
বিরোধী জোটের ন্যূনতম এজেন্ডা ঠিক করতে এদিন খাড়্গে ও রাহুল গান্ধীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন শারদ পাওয়ার। মমতার তোলা ইভিএম ইস্যুকে গুরুত্ব দিচ্ছে কংগ্রেস। মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দিগ্বিজয় সিং এদিন মতার সঙ্গে দেখা করলে মমতা জানতে চান, ‘মধ্যপ্রদেশে হারলেন কী করে? এমন রেজাল্ট কেন হল?’জবাবে ইভিএমে কারচুপির অভিযোগ করেন দিগ্বিজয়। বলেন, ‘এব্যাপারে কম্পিউটার সায়েন্টিস্ট ডঃ শুভাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁর দাবি, কোনও মেশিনে যদি চিপ থাকে তাহলে হ্যাক করার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। বিশেষত, ভিভিপ্যাট মেশিন লাগানোর পর এই সম্ভাবনা বেড়েছে।’ এরপর মমতা বলেন, সেই জন্যই তো ১০০ শতাংশ ভিভিপ্যাট গোনার দাবি করেছি। এ ব্যাপারে বিরোধী জোটের উচিত নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হওয়া। প্রয়োজনে ৭২ ঘণ্টা ধর্ণার পরামর্শও দেন তিনি।