মীযান ডেস্ক: বুধবারই লোকসভায় পাশ হয়েছে তিনটি ফৌজদারি বিল। আজ বৃহস্পতিবার এই তিনটি বিল পেশ করা হতে পারে রাজ্যসভায়। এরই মধ্যে রিপোর্টে দাবি করা হল, বিরোধী দলগুলি নাকি এই তিনটি বিলের বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে। এই নিয়ে ইন্ডিয়া জোটের নেতারা তাদের শরিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনা করেছেন বলেও শোনা যাচ্ছে। 'ভারতীয় ন্যায় সংহিতা', 'ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা' এবং 'ভারতীয় সাক্ষ্য সংহিতা' – সংক্রান্ত তিনটি বিলের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারে বিরোধীরা। বুধবার লোকসভায় ধ্বনি ভোটে পাশ হয়েছে এই তিনটি বিল। সরকারি রিপোর্টে দাবি করা হচ্ছে, বিরোধীরা তিনটি বিলের খামতি বা ত্রুটি খুঁজে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হবে। রাজ্যসভার কংগ্রেস সাংসদ তথা সু্প্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি বিরোধীদের হয়ে সুপ্রিম কোর্টে এই মামলা লড়তে পারেন। রাজ্যসভাতেও এই তিনটি বিল পাশ হলে এ নিয়ে শীর্ষ আদালতে মামলা করা হতে পারে। জানা গিয়েছে, কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের বাড়িতে গতকাল বুধবার বৈঠকে বসেন বিরোধী নেতারা। সেখানেই তিন ফৌজদারি আইন নিয়ে আলোচনা করেন তাঁরা। বৈঠক শেষে তৃণমূলের সাংসদ সৌগত রায় জানান, লোকসভায় পাশ হওয়া তিনটি ফৌজদারি বিলের ভুল-ত্রুটি নিয়ে আলোচনা হয় তাঁদের। এই আবহে বিলগুলিকে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ জানানো হবে বলে জানান সৌগত রায়। এই বিষয়ে আইনজীবী ও সাংসদ অভিষেক মনু সিংভি বলেন, 'নয়া বিলে দু'টি সেট সন্ত্রাস বিরোধী আইনের প্রস্তাব রয়েছে। তবে কোন ক্ষেত্রে কোন ধারার প্রয়োগ করা হবে, তার কোনও গাইডলাইন উল্লেখ নেই।' এই 'ত্রুটির' বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতে যাওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। ন্যায় সংহিতা বিলে কী কী আছে? ১। রাষ্ট্রদ্রোহের বদলে ‘রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অপরাধ’ নামে নতুন ধারা ২। গণপিটুনিতে ফাঁসির সাজা ৩। ধর্ষণের মামলা ৩৭৫-৩৭৬ ধারার পরিবর্তে ৬৩ ধারায় ৪। খুনের মামলা ৩০২ ধারার পরিবর্তে ১০১ ধারায় ৫। অপহরণের মামলা ৩৫৯ ধারার বদলে ১৩৬ ধারায় হবে ৬। ধৃতদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্যের রেকর্ড থাকবে প্রত্যেক থানায়। সেই রেকর্ডের দায়িত্বে থাকবেন সুনির্দিষ্ট একজন অফিসার ৭। পাচার রুখতে লিঙ্গ ব্যতিরেকে কড়া ব্যবস্থা ৮। ১৮ বছরের নীচে মেয়েদের ধর্ষণে নয়া আইনে পকসো সমতুল ধারায় ব্যবস্থা ৯। পথ দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুতেও আসছে বদল। গাড়ির চালক দুর্ঘটনার শিকার ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে লঘু শাস্তির বিধান। গড়ি চাপা দিয়ে পালিয়ে গেলে হবে কঠোর সাজা ১০। সময়মতো মামলার শুনানির লক্ষ্যে রেহাই চেয়ে আবেদন পেশে সাতদিন সময় পাবেন অভিযুক্ত। বিচারককে সাতদিনের মধ্যেই এনিয়ে শুনানির ব্যবস্থা করতে হবে। বিচারের প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে সর্বাধিক ১২০ দিনের মধ্যে ১১। তিন থেকে সাত বছর পর্যন্ত সাজার অপরাধে ১৪ দিনের মধ্যে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করতে হবে। অর্থাৎ এক্ষেত্রে এফআইআর দায়ের করতে হবে ১৪ দিনের মধ্যেই। আর কম শাস্তিযোগ্য অপরাধে এফআইআর দায়ের করতে হবে তিন দিনের মধ্যে।