রাজ্যসভার এক-তৃতীয়াংশ সাংসদের বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলা, সম্পদের বহর দেখলে চোখ কপালে উঠে যাবে, শীর্ষে বিজেপি

মীযান ডেস্ক: এক-তৃতীয়াংশ শব্দ দুটো উচ্চারিত হলেই যেন মনে হয় সংসদে মহিলাদের জন্য আসন সংরক্ষণ বিল। কিন্তু না। সবসময় তা হয় না। এখানে খবর হল রাজ্যসভার এক-তৃতীয়াংশ বা ৩৩ শতাংশ সাংসদের বিরুদ্ধে রয়েছে ফৌজদারী মোকদ্দমা। আবার তাদের সম্পদের বহর দেখলে যে কোনও মানুষের চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যাবে, বা চোখ কপালে উঠে যাবে। এসব নেতা বা সাংসদদের আর্থিক প্রতিপত্তির খতিয়ান ধনকুবেরদেরকেও হার মানায়। তাই অনেকে বলে থাকেন, রাজনীতি ও দুর্নীতি যেন সমার্থক! এই দুইয়ের মিশেলে যথকিঞ্চিত পেশিশক্তির ফোড়ন পড়লে তো সোনায় সোহাগা। সবমিলিয়ে রাজনীতির নেতানেত্রীদের সম্পর্কে জনমানসে ধারণা খুব একটা উজ্জ্বল যে নয় – তা বলাই বাহুল্য। এই প্রেক্ষিতে সাম্প্রতিক এক রিপোর্ট বলছে, রাজ্যসভার ৩৩ শতাংশ সাংসদের নামে রয়েছে গুরুতর ফৌজদারি মামলা।

স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস’ (এডিআর) এর সেই রিপোর্টে বলা হয়েছে, সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভার সাংসদদের ৩৩ শতাংশের বিরুদ্ধে রয়েছে ফৌজদারি মোকদ্দমা। তাঁদের মিলিত সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা! ন্যাশনাল ইলেকশন ওয়াচ (এনইডব্লু) এবং এডিআর এর যৌথ সমীক্ষা মোতাবেক, রাজ্যসভার দু-জন সাংসদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারা বা খুনের মামলা চলছে। চারজন সাংসদের বিরুদ্ধে ৩০৭ ধারায় হত্যা চেষ্টার মামলা আছে। রাজ্যসভার মোট ২২৫ জন সাংসদের উপরেই এই সমীক্ষা চালানো হয়।

ফৌজদারি মামলার ক্ষেত্রে তালিকায় কোন দল কোথায় রয়েছে তাও বলা হয়েছে এডিআর রিপোর্টে। দেখা যাচ্ছে, সংখ্যাতত্ত্বের হিসাবে দাগি সাংসদদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি বিজেপিতে। রাজ্যসভার দলের ৯০ সাংসদের মধ্যে ২৩ শতাংশ বা ২১ জনের নামে ফৌজদারি মামলা রয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা কংগ্রেস শিবিরের ২৮ জন সাংসদের মধ্যে ১৪জন ‘দাগি’। তৃতীয় স্থানে ঘাসফুল শিবিরের ১৩ সাংসদের মধ্যে ৫ জনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রয়েছে, যা প্রায় ৩৮ শতাংশ। সব মিলিয়ে ৪০ জন সাংসদের নামে গুরুতর ফৌজদারি মামলা রয়েছে।

এডিআর-এর রিপোর্ট মোতাবেক, রাজ্যসভার দাগি সাংসদদের মিলিত সম্পত্তি ১৯ হাজার ৬০২ কোটি টাকা। অর্থাৎ, এই হিসাবে প্রত্যেক রাজ্যসভা সাংসদের গড় সম্পদের পরিমাণ ৮৭ কোটি ১২ লক্ষ টাকা। এদের মধ্যে ১৪ জন বিলিয়নেয়ার। নির্বাচনে জমা দেওয়া হলফনামার ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে রাজ্যসভার ৭৫ সাংসদ স্বীকার করেছেন যে, তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রয়েছে। বিজেপি, কংগ্রেস, ঘাসফুল ছাড়া লালু যাদবের দলের ৬ সাংসদের মধ্যে ৪জন, সিপিএমের ৫ জনের মধ্যে ৪জন, আপ এর ১০ জনের মধ্যে ৩জন, ডিএমকে-র  ১০ এর মধ্যে ২ জনের নামে ফৌজদারী মামলা চলছে।  

অন্যদিকে সম্পত্তির হিসাবে দেখা যাচ্ছে রাজ্যসভার সাংসদদের গড় সম্পদের পরিমাণ ৮৭.১২ কোটি টাকা। ৯৩জন সাংসদ ১০ কোটির বেশি মালিক, ৩৪ জন ১ থেকে ৫ কোটির মালিক, ৭২ জন সাংসদের রয়েছে ৫ কোটির বেশি। রাজ্যসভার মোট ৩১ জন বা ১৪ শতাংশ সংসদ বিলিয়নেয়ার।

Stay Connected

Advt.

%d bloggers like this: