কুদস্‌ দিবসে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে কলকাতায় এসআইও-র প্রতিবাদ ও মানব বন্ধন

মীযান ডেস্ক: গাজা উপত্যকায় বর্বরোচিত ইজরাইলী হত্যালীলায় নিরীহ ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়ানো এবং তাঁদের অসহায় পরিস্থিতিকে বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরার লক্ষ্যে কলকাতায় এক প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন আয়োজন করল এসআইও। দেশের সর্ববৃহৎ ইসলামী ছাত্র সংগঠন এসাআইও-র পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য শাখার উদ্যোগে শুক্রবার ৫ এপ্রিল ধর্মতলায় স্টেটসম্যান হাউসের সামনে হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে গর্জে ওঠেন বহু ছাত্র, যুব ও সাধারণ মানুষ।

উল্লেখ্য, প্রতি বছর রমযান মাসের শেষ শুক্রবার ইয়াওম-আল-কুদস্‌ বা কুদস্‌ দিবস হিসেবে পালিত হয়ে থাকে। ১৯৪৮ সালের নাকবা (মহা বিপর্যয়) থেকে শুরু করে বর্তমান সময় পর্যন্ত ইহুদী যায়নবাদ কর্তৃক গাজাবাসী তথা ফিলিস্তিনিদের উপর চালানো পাশবিক নির্যাতন, গণহত্যা, পবিত্র বায়তুল মুকাদ্দাস বা মসজিদুল আকসায় আক্রমণ-হামলা ও ইজরাইল রাষ্ট্রের অবৈধ আগ্রাসন তথা জবরদস্তি দখলদারীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রকাশের জন্যই বিশ্বজুড়ে এই দিনটি পালন করা হয়।

এদিন এসআইও-র রাজ্য সভাপতি সাঈদ বি.এস আল মামুন মানববন্ধনে অংশ নিযে বলেন, “আল-আকসা মসজিদ সমগ্র দুনিয়ার মুসলমানদের জন্য একটি পবিত্র স্থান। তা রক্ষার করার দায়িত্ব শুধু ফিলিস্তিনি বা আরবদের নয়; বরং দুনিয়ার সকল মুসলমানদের জন্য ফরয। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা এবং সেখানে ন্যায় ও সুবিচার প্রতিষ্ঠা দুনিয়ার সকল ন্যায়বান মানুষের নৈতিক দায়িত্ব। দুনিয়ার সকল স্বাধীনতাকামী মানুষদেরকে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকে নিজেদের মিশন বানিয়ে নিয়ে তার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো উচিত। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা ছাড়া এই দুনিয়াকে স্বাধীন হিসেবে মেনে নেওয়া যায় না।“

সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক ডাঃ এহসানুর রহমান বলেন, “ইজরাইল একটি দখলীকৃত রাষ্ট্র। ১৯৪৮ সালে যে বাউন্ডারি নিয়ে এটা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তখনও এটা দখলীকৃত ছিল এবং এখনও তা প্রতিনিয়ত পুরো ফিলিস্তিনকে কব্জা করার জন্য লেগে আছে। আধুনিক সময়ের দীর্ঘতম একটি দখলদারী রাষ্ট্র হচ্ছে ইজরাইল। ইজরাইল ধ্বংসাত্মক এবং ভয়ংকর যুদ্ধ সৃষ্টিকারী একটি রাষ্ট্র যা শিশু, বৃদ্ধ এবং নারীদেরকে হত্যার পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, এমনকী হাসপাতালে বোমাবর্ষণ করে। ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ক্ষুধাকে হাতিয়ার করে। যুদ্ধের নীতি অনুসারে এগুলো চরম অন্যায় ও অমানবিক কাজ।”

সংগঠনের রাজ্য পরামর্শ পরিষদের সদস্য মহঃ নাদিম বলেন, “ইজরাইল একটি সন্ত্রাসবাদী রাষ্ট্র। তার অবৈধ অস্তিত্ব দুনিয়া জুড়ে যুদ্ধের দামামা বাজিয়ে রাখবে সর্বদাই। অন্যের দেশে অন্যায়ভাবে প্রবেশ করে বিরোধীদেরকে নিজেদের টার্গেট বানানো থেকে নিয়ে তাদের ধন-সম্পদ লুট করা তাদের কাছে মামুলি ব্যাপার। সম্প্রসারণবাদী উচ্চাকাঙ্ক্ষা দ্বারা চালিত হয়ে ইজরাইল পুরো মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তার করতে চাওয়া একটি রাষ্ট্র। ইজরাইলী কর্তৃপক্ষ ‘গ্রেটার ইজরাইল’-এর নামে বারবার এসব উচ্চাকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করে আসছে। এই আগ্রাসী অবস্থান সহিংসতা ও অস্থিরতাকে স্থায়ী করে, যা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করে। যতদিন ইজরাইলের অপবিত্র অস্তিত্ব থাকবে, ততদিন ন্যায়বিচার, ন্যায়পরায়ণতা ও মানবিক মর্যাদার স্বপ্ন অধরা থেকে যাবে। ইজরাইলের অস্তিত্ব আধুনিক যুগের নিপীড়নের প্রতীক।”

সংগঠনের শিক্ষাঙ্গন সম্পাদক যুবায়ের আহমেদ বলেন, “দীর্ঘ চেষ্টা-প্রচেষ্টার পর ১৯৪৭ সালে আমাদের দেশ স্বাধীন হয়েছিল। ভারতীয়রা জানে স্বাধীনতার মূল্য। ভারত সর্বদা ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার বিষয়টিকে সমর্থন করে এসেছে। আজও প্রত্যেক ভারতীয়ের অবশ্য কর্তব্য হচ্ছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা সংগ্রামে সাথ দেওয়া।”

এছাড়াও এসআইও আলিয়া বিশবিদ্যালয় ইউনিটের পক্ষ থেকে  জুম্মার নামাযের পর নিউটাউন ক্যাম্পাসে ফিলিস্তিনিদের সাথে একাত্মতা ও ইজরাইলী বর্বরতার বিরুদ্ধে মানববন্ধন আয়োজন করা হয়, সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা আংশগ্রহণ করে।

Stay Connected

Advt.

%d bloggers like this: