বিজেপির ইস্তেহারে নাগরিকত্বের গ্যারান্টি উধাও, ফুঁসছে মতুয়া সমাজ

মীযান ডেস্ক: আর মাত্র চারদিন পর ১৯ এপ্রিল লোকসভার প্রথম দফা নির্বাচন শুরু হচ্ছে গোটা দেশে। তার আগে রবিবার নির্বাচনী ইস্তাহার প্রকাশ করল বিজেপি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি-সহ দলের প্রথম সারির নেতারা ঢাকঢোল পিটিয়ে ইস্তাহার প্রকাশ করলেও সেখানে মতুয়াদের নাগরিকত্ব নিয়ে কোনও ‘গ্যারান্টি’ দিল না বিজেপি। স্বাভাবিকভাবে লোকসভা ভোটের আগে এ নিয়ে শুরু হয়েছে তরজা। ইস্তেহারে তাঁদের সম্পর্কে উচ্চবাচ্য না থাকায় ব্যাপক ক্ষুব্ধ মতুয়ারা। এমনিতেই এখন লোকসভা ভোট নিয়ে চারিদিকে জোর চর্চা চলছে। নির্বাচন এলেই নাগরিকত্বের ‘টোপ’ দেয় বিজেপি। আসল লক্ষ্য মতুয়া ভোটকে দখল করা। ২০১৪ বা ২০১৯-এর পর এবার ২০২৪ এও একই পন্থা নিয়েছে বিজেপি। কিছুদিন আগে নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বড় ঘোষণা করেছে কেন্দ্র সরকার। তাই নিয়ে এখনও দোটানায় মতুয়ারা। সেই পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপির ইস্তাহারে উদ্বাস্তু বা নমঃশূদ্রদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কোনও গ্যারান্টির কথা না থাকায় ‘সংশয়’ আরও বাড়ল।
বিজেপির ইস্তাহারে মহাগুরুত্ব পেয়েছে ‘মোদির গ্যারান্টি’। কিন্তু মতুয়াদের নাগরিকত্ব নিয়ে মোদির গ্যারান্টি ‘জিরো’। তাঁদের বিষয় নিয়ে ‘উপেক্ষা’র জবাব দিতে গিয়ে বারবার নিজেদের ক্ষোভের কথা সোচ্চারে জানিয়েছেন মতুয়া সমাজ। তাঁদের বক্তব্য, দুর্নীতি ঠেকানো থেকে মহিলা-দরদ ও আবাস যোজনা নিয়ে লম্বা চওড়া ভাষণ দিলেও মতুয়াদের নাগরিকত্ব দেওয়ার ব্যাপারে একটা কথাও কেন খরচ করলেন না বিজেপির কোনও কেন্দ্রীয় নেতা। তাঁরা ইস্তাহারে প্রতিশ্রুতির দিকে তাকিয়ে ছিলেন। কিন্তু সম্পূর্ণ নিরাশ হয়েছেন।

মতুয়া গোঁসাই ও দলপতিদের একাংশ বলছেন, ‘আমাদের দাবি নিঃশর্ত নাগরিকত্ব। কিন্তু বিজেপি কিছুই ব্যবস্থা করেনি। বিজেপি নেতাদের মতুয়াদের জন্য এতই যদি দরদ হয়, তাহলে ইস্তাহারে কেন নাগরিকত্ব নিয়ে কিছু বলল না। আসলে সবটাই ধাপ্পাবাজি।’উল্লেখ্য, লোকসভা ভোটের মুখে ও বারুণী মেলা চলাকালীন বড়মা বীণাপাণি ঠাকুরের মন্দিরের দখল নিতে মরিয়া মনোভাব দেখান শান্তনু ঠাকুর এবং তাঁর দলবল। অভিযোগ, তালা ভেঙে ভিতরে ঢোকেন তাঁরা। পরে বড়মার মন্দির-সহ তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মমতাবালা ঠাকুরের বাড়িরও নাকি দখল নেন। শান্তনুর এমন ভূমিকায় বেশ কিছুটা ব্যাকফুটে চলে গিয়েছে বিজেপি। মতুয়ারা মনে করছেন, এই ধরনের কাজ অত্যন্ত গর্হিত। এরপরই এদিন ইস্তাহার দেখে মতুয়াদের বিজেপি সম্পর্কে ‘আশাভঙ্গ’ হয়েছে বলে জানিয়েছেন কেউ কেউ।

এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর বলেন, ‘এবার মতুয়ারা বুঝতে পারছেন, নাগরিকত্বের টোপ আসলে জুমলা। ভোট পাবার জন্যই ওরা মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেয় মতুয়াদের। এবার মতুয়াদের সময় এসেছে আসল মানুষ চেনার।’ বিষয়টি নিয়ে বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি দেবদাস মণ্ডল বলেন, ‘সারা দেশের মানুষ দেখতে পাচ্ছেন মোদিজির উন্নয়ন। সিএএ চালু হয়ে গিয়েছে। মতুয়া বা উদ্বাস্তুরা এতে খুবই খুশি। ওঁরা বিজেপির সঙ্গেই আছেন।’

Stay Connected

Advt.

%d bloggers like this: