”বেশ করেছি বলেছি, প্রয়োজনে আবারও বলব” – বিদ্বেষী ভাষণে অনড় মোদি

মীযান ডেস্ক:  রবিবার নির্বাচনী প্রচারে রাজস্থান গিয়ে তিনি যা বলেছিলেন, তা নিয়ে এখনও গোটা দেশে তোলপাড় চলছে। দেশ-বিদেশে ছি ছি পড়ে গেলেও নরেন্দ্র মোদি কিন্তু নিজের অবস্থান থেকে সরতে রাজি নন। অর্থাৎ তিনি এবার থেকে এরকমই চোখা চোখা মুসলিম-বিদ্বেষী ভাষণ দিয়ে নফরতের কারবার চালিয়ে যাবেন। কারণষ ভোট বড় বালাই। ভোটে জিততে তিনি সাম্প্রদায়িক বক্তব্য রাখতে বিন্দুমাত্র পিছপা হতে রাজি নন। অন্ধ বিভাজন ও মেরুকরণের রাজনীতি এবং বিদ্বেষ ভাষণে অনড় প্রধানমন্ত্রী মঙ্গলবার সাফ বললেন, 'বেশ করেছি বলেছি। প্রয়োজনে আবারও বলব।' এমনকী বিরোধীরা এই ইস্যুতে প্রবল আক্রমণ করায় তিনি মনে করছেন, ‘বিরোধীদের লঙ্কার জ্বলুনি শুরু হয়েছে।’ এদিন আবার রাজস্থানে গিয়ে সেকথা স্পষ্ট জানিয়েও এলেন মোদি।

উল্লেখ্য, রবিবার রাজস্থানে চরম অবমাননাকর ও কুরুচিকর ভাষণের পরদিন সোমবারই প্রায় সাড়ে ১৭ হাজার সই সংবলিত ডেপুটেশন জাতীয় নির্বাচন কমিশনে জমা দিয়েছেন দেশের শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষজন। একইভাবে বিভিন্ন রাজ্যে নির্বাচন কমিশনের দফতরে প্রতিবাদী ডেপুটেশন দেওয়া চলছে। গতকাল মঙ্গলবার কলকাতায় নির্বাচন কমিশনের অফিসে গিয়ে কড়া ডেপুটেশন দিয়েছেন 'সংবিধান বাঁচাও দেশ বাঁচাও মঞ্চ'।

দু’দিন আগে রাজস্থানের বাঁশওয়াড়ায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে দেশবাসীর সম্পদ কেড়ে নিয়ে ‘যাদের বেশি সন্তান হয়’, সেই ঘুসপেটিয়া মুসলিমদের মধ্যে বিলি করে দেবে। তারপর আর কোনও রাখঢাক না করে সরাসরি মুসলিমদেরকে টার্গেট করে বলেন, ‘এমনকী মা-বোনেদের মঙ্গলসূত্রও থাকবে না। সেটাও কেড়ে নেবে কংগ্রেস।’ ইন্ডিয়া জোট এর তরফে নির্বাচন কমিশনে নালিশও জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনকিছুকেই আমল দেননি মোদি। বরাবরের মতো ঔদ্ধত্য ও অহমিকা ছাড়তে নারাজ তিনি। তার প্রমাণ এদিনও রাজস্থানের টঙ্কে এলাকায় এক নির্বাচনী সভায় তিনি কলার তুলে আস্ফালন করে বলেন, ‘রবিবার কিছু কথা বলেছি। কংগ্রেসের গোপন বাসনার কথা ফাঁস করে দিয়েছি। যা বলেছি, ঠিক বলেছি। দরকার পড়লে আবারও বলব। আর সেটা শুনে কংগ্রেস ও বিরোধীদের মধ্যে লঙ্কার জ্বলুনি হয়েছে। দিশাহারা কংগ্রেস তাই সর্বত্র মোদির নামে আক্রমণ করছে বলে অনুযোগ করেন মোদি।

এভাবেই এদিন নিজের অবস্থানে অনড় থেকে আবারও বলেন, ‘কংগ্রেস বলেছে যে, তারা তপসিলি জাতি, উপজাতি, আদিবাসীদের থেকে সংরক্ষণ কেড়ে নিয়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে বিলি করবে। আপনাদের সম্পত্তি হরণ করার চক্রান্ত করছে কংগ্রেস। সংবিধান যখন তৈরি হয় তখন ধর্মের ভিত্তিতে সংরক্ষণ করা হয়নি। আপত্তি করা হয়েছিল। কিন্তু প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং বলেছিলেন যে, দেশের সম্পদের উপর মুসলিমদের অধিকার সবার আগে।’ এখানেই শেষ নয়, এদিন টঙ্কের সভা থেকে মোদি আরও একধাপ এগিয়ে সাফ জানিয়েছেন, ‘কংগ্রেসের শাসনে হনুমান চালিশা পাঠ করাও অপরাধ। এর আগে রাজস্থানে কংগ্রেস আমলে রামনবমীর অনুমতি দেওয়া হয়নি। এবার আমাদের সরকার আসায় শান্তিপূর্ণভাবে রামনবমী হয়েছে।’

Stay Connected

Advt.

%d bloggers like this: