মীযান ডেস্ক: ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য ত্রাণকাজে নিযুক্ত সংস্থাকে নিষিদ্ধ করায় রাষ্ট্রসংঘের তোপের মুখে পড়ল ইসরাইল। রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার সংস্থা ইউনাইটেড নেশনস রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্কস এজেন্সি’কে নিষিদ্ধ করার পরিণাম ভয়াবহ হবে বলে বুধবার সাফ জানান মহাসচিব আন্তনিও গুতেরেস। গত সোমবার ইসরাইলের পার্লামেন্টে বিল পাস করে তাদের অধিগৃহীত ও নিয়ন্ত্রিত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে রাষ্ট্রসংঘের ত্রাণ সংস্থার কাজ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ফলে গাজার মতো যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলে শরণার্থীদের কাছে জীবনদায়ী ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া সংস্থাটির পক্ষে প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে। তাই এমন পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক আইন মেনে ইসরাইলকেই গাজায় ত্রাণ সরবরাহ চালানোর ভার নিতে হবে বলে জানান গুতেরেস।
প্রসঙ্গত, গাজায় ইউএনআরডব্লিউএ’র কর্মরত প্রায় ১৩ হাজার কর্মীর মধ্যে কয়েকজন ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের হামলার সঙ্গে যুক্ত ছিল বলে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু অভিযোগ তোলে। অর্থাৎ ইউএনআরডব্লিউএ-এর কর্মীরা নাকি ইসরাইলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িত। যার জেরে রাষ্ট্রসংঘের অধীনস্ত সংস্থাটির ওপরে নিষেধাজ্ঞা চাপানো হল। ইতিমধ্যে একাধিক দেশ ও মানবাধিকার সংস্থা এর তীব্র বিরোধিতা করেছে।
আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ইসরাইলের এই আইনের বিরোধিতা করতে বাধ্য হয়েছে ওয়াশিংটন। পরিস্থিতি বিবেচনা করে রাষ্ট্রসঙ্ঘের মহাসচিব নেতানিয়াহুকে চিঠিতে লিখেছেন, “একটি দখলদার শক্তি হিসেবে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন মেনে ফিলিস্তিনিদের প্রয়োজন মেটাতে ইসরাইলকেই তৎপর হতে হবে। ব্যবস্থা করতে হবে খাদ্য, স্বাস্থ্য পরিষেবা ও শিক্ষার। ইজরায়েল যদি তা না করতে পারে তবে তাদের রাষ্ট্রসঙ্ঘ এবং ইউএনআরডব্লিউএ পরিষেবা চালানোর ব্যবস্থা করে দিতে হবে।”
উল্লেখ্য, রাষ্ট্রসঙ্ঘের তরফে সমগ্র গাজা উপত্যকাকে ‘বিপর্যস্ত অঞ্চল’ বলে ঘোষণা করেছে। গত সপ্তাহে রাষ্ট্রসংঘ বলেছে, গত এক বছরের যুদ্ধে ফিলিস্তিনের অর্থনীতি একেবারে খতম হয়ে গেছে। ৮০ শতাংশ মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। অর্থনীতি ফেরাতে ৩৫০ বছর লাগবে। গাজা উপত্যকার প্রায় ২০ লাখ মানুষ রাষ্ট্রসংঘের এই সংস্থাটির সাহায্য এবং পরিষেবার ওপর নির্ভরশীল।