মীযান ডেস্ক: ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির অনুমোদন দিয়েছে ইসরাইলের মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু শুক্রবার এই প্রস্তাব পার্লামেন্টে উত্থাপন করেন। ফলে ইসরাইলের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মধ্যে থেকে ১৯৭৭ জনকে ছেড়ে দেবে নেতানিয়াহু সরকার। হামাস মুক্তি দেবে ৩৩জন জিম্মিকে। অর্থাৎ ইসরাইলের একজনের বিনিময়ে ছাড়া পাবে প্রায় ৬০ জন ফিলিস্তিনি।
শনিবার ১৮ জানুয়ারি ২০২৫ ভোরে ইসরাইলের আইন মন্ত্রক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘ইসরাইল সরকার জিম্মি ফেরত পরিকল্পনার অনুমোদন দিয়েছে। আগামীকাল রবিবার থেকে কার্যকর হবে এটা। যুদ্ধবিরতির প্রথম দিন রবিবার দেশটির বিভিন্ন কারাগারে বন্দি ৯৫ জন ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়া হবে। এর মধ্যে ৬৯ জন নারী, ১৬ জন পুরুষ এবং ১০ জন শিশু বা কিশোর। এদের নামের তালিকাও প্রকাশ করেছে তারা।
চুক্তিটি তিনটি পর্বে বিভক্ত। প্রথম পর্বে যে ৩৩ জনকে হামাস মুক্তি দেবে, তাদের মধ্যে রয়েছে নারী, বয়স্ক এবং অসুস্থ। অন্যদিকে, ইসরাইল যে ১৯৭৭ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে, তার মধ্যে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত কয়েদি আছেন ২৯০ জন এবং অন্যান্য অপরাধে বিভিন্ন মেয়াদে কারাগারে রয়েছেন ১৬৮৭ জন। তবে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কাউকে মুক্তি দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছে ইসরাইল।
চুক্তির শর্ত অনুসারে, আগামী ৬ সপ্তাহে সাত দফায় মুক্তি দেওয়া হবে এই ৩৩ ইসরায়েলি জিম্মি এবং ১৯৭৭ জন ফিলিস্তিনিকে। উল্লেখ্য, হামাসের কাছে থাকা জিম্মিদের মধ্যে ৬০ জীবিত আছেন বলে ধারণা ইসরাইলের। অন্যদিকে অ্যাডভোকেসি সংস্থা প্যালেস্টাইনিয়ান কমিশন অব ডিটেইনি’জ অ্যাফেয়ার্স জানিয়েছে, ইসরাইলের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি আছেন প্রায় ১০ হাজার ৬০০ ফিলিস্তিনি। তাদের মধ্যে যাবজ্জীবন কারাগারে দণ্ডিত অন্তত ৬০০ জন।
উল্লেখ্য, ৭ অক্টোবর ২০২৩ ইসরাইলি ভূখণ্ডে প্রবেশ করে নজিরবিহীন হামলা চালায় হামাস। তাতে নিহত হন ১২০০ জন। পাশাপাশি ২৫০ জনকে জিম্মি হিসেবে গাজায় ধরে নিয়ে যায় হামাস যোদ্ধারা। প্রতিশোধ নিতে ওই দিন থেকেই গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরাইলি সেনারা, যা বিগত ১৫ মাস ধরে চলছে। ইসরায়েলি বর্বর হামলায় এ পর্যন্ত অন্তত ৪৮ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু। আহতের সংখ্যা প্রায় দেড় লক্ষ এবং ২৩ লক্ষ গাজাবাসীর মধ্যে ১৯ লক্ষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন, যা এ উপত্যকার মোট জনসংখ্যার প্রায় ৯০ শতাংশ।