মীযান ডেস্ক: মণিপুরে নারীদের ওপর পাশবিকতা ও বর্বরতার ইস্যুতে যখন পার্লামেন্টে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে তিনদিন ধরে বিতর্ক চলেছে, ঠিক তখনই নারী নির্যাতন নিয়ে এক রিপোর্টে চরম বিড়ম্বনায় পড়ল গেরুয়া শিবির। অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস এবং ন্যাশনাল ইলেকশন ওয়াচ নামে এক সংস্থা তাদের রিপোর্টে জানিয়েছে, দেশে ৭৬২ জন সাংসদ এবং ৪০০১ জন বিধায়ক নারী নির্যাতন বা নারীঘটিত অপরাধের সঙ্গে জড়িত। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের প্রায় ৫০০ হলফনামা খতিয়ে দেখে এই চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট তৈরি করেছে সংস্থাটি।
সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, নারীঘটিত অপরাধের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে বিজেপির সাংসদ-বিধায়করা (৪৪), দ্বিতীয় স্থানে কংগ্রেস (২৫), তৃতীয় স্থানে রয়েছে আম আদমি পার্টি (১৩)। এইসব বিধায়ক-সাংসদদের বিরুদ্ধে মহিলাদের অপহরণ, ধর্ষণ, শ্লীলতাহানি, যৌন হেনস্তা, অশালীন আচরণ এমনকী বধূ নির্যাতনেরও অভিযোগ রয়েছে। বর্তমানে ১৮ জন সাংসদ ও বিধায়ক ধর্ষণের মতো গুরুতর মামলায় জড়িত। তার মধ্যে ৭ জন বিজেপির। তবে এমন গর্হিত অপরাধের পরও বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ওইসব প্রভাবশালী নেতারা। সমীক্ষায় জানা গেছে, মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধে জড়িত বা অভিযুক্ত সাংসদ-বিধায়কের সংখ্যা পশ্চিমবঙ্গে সবচেয়ে বেশি (২৬)। যুগ্মভাবে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে মহারাষ্ট্র ও ওড়িশা (১৪)।
চাকরি-বিয়ে ইত্যাদি প্রলোভন পেয়ে প্রভাবশালীদের লালসার ফাঁদে পা দিচ্ছেন অনেক মহিলা। বছরের পর বছর নানাভাবে নির্যাতিত হয়ে পুলিশ-প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন অনেকেই। কেউ কেউ দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ে জয়ও পেয়েছেন, কারও কারও আবার ইনসাফ পেতে গিয়ে বিচারব্যবস্থার দীর্ঘসূত্রিতায় জুতোর সোল ক্ষয়ে গেছে, কিন্তু সুবিচার মেলেনি। সমীক্ষা রিপোর্ট বলছে, ১৩৪ জন সাংসদ ও বিধায়কের বিরুদ্ধে নারীঘটিত অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে ২১ জন সাংসদ ও ১১৩ জন বিধায়ক। ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে এই রিপোর্ট বিজেপির জন্য অস্বস্তি বাড়াবে বৈকি। এখনও যদি তারা শিক্ষা না নিয়ে নারী নির্যাতনে অভিযুক্তদের প্রার্থী করেই চলে তাহলে আগামীতে গেরুয়া শিবিরের দুর্ভোগ আরো বাড়বে।