মীযান ডেস্ক: এবার কেন্দ্র সরকারের রাশ হাতে নিল সংঘ পরিবার। কারণ, এবার আর 'মোদি সরকার' নয়, এবার শপথ নিল এনডিএ সরকার। তবে খুব বেশি রদবদলের ঝুঁকি নিতে পারল না আরএসএস-ও। বদল হল না বিগ ফোরেও। অর্থ, স্বরাষ্ট্র, বিদেশ ও প্রতিরক্ষায় আগের মন্ত্রীরাই রয়ে গেলেন। তবে শরিকদের চাপ উপেক্ষা করে সিংহভাগ বড় মন্ত্রকই নিজেদের হাতে রাখতে সফল হল বিজেপি। ৭২ জনের মন্ত্রিসভায় ৩০ পূর্ণমন্ত্রী, ৩৬জন প্রতিমন্ত্রী এবং ৫জন স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত। জোট শরিকদের সব মিলিয়ে মাত্র ১১জনকে মন্ত্রী করায় বিভিন্ন দলের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ। মহারাষ্টে সবথেকে বেশি বেঁকে বসেছে অজিত পাওয়ার ও একনাথ শিন্ডে। সবথেকে উল্লেখযোগ্যভাবে বাদ পড়েছে হিমাচল থেকে জয়ী পাঁচবারের সাংসদ ও প্রাক্তন মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর। যিনি 'দেশ কো গাদ্দারো কো গোলি মারো শালে কো' বলেছিলেন। নতুন চমক বলতে মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান ও বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডা। ১০০ দিনের কাজ ও কিষান নিধি যোজনার মতো প্রত্যক্ষ জনমুখী দুই মহামূল্যবান মন্ত্রক পেলেন চৌহান। অথচ সম্প্রতি তাঁকেই মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হতে না দিয়ে রাজনৈতিকভাবে প্রায় কোণঠাসা করার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু সংঘের নির্দেশে আজ তিনিই কেন্দ্র সরকারের ক্ষমতার অন্যতম ভরকেন্দ্র। স্বাস্থ্যমন্ত্রক আবার ফিলে পেলেন নাড্ডা। নীতিন গাদকারি আবারও পেলেন সড়ক ও পরিবহণ মন্ত্রক। আবাসন ও বিদ্যুৎ দফতর পেলেন হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর। শিক্ষায় ধর্মেন্দ্র প্রধানই রইলেন। রেশন ও খাদ্য সরবরাহ মন্ত্রকে প্রহ্লাদ যোশি। রাজনাথ সিং প্রতিরক্ষা। অমিত শাহ স্বরাষ্ট্রেই। নির্মলা সীতারামণ আবার পেলেন অর্থ। তবে এবার শপথ নেওয়ার পরেও দুদিন কেটে গেল মন্ত্রীদের দফতর বণ্টনে। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে একঝাঁক শরিক দলকে নিয়ে বেশ বিপাকে পড়েছেন মোদি। নীতীশ কুমার অথবা চন্দ্রবাবু নাইডুরা যে এই সরকারের প্রাণভোমরা, সেকথা মন্ত্রিসভা দেখে বোঝার উপায় নেই। তারা তাদের পছন্দের মন্ত্রক পেলেন না। অন্য শরিকরাও প্রায় গুরুত্বহীন। চন্দ্রবাবু নাইডু চাইছেন লোকসভার স্পিকার পদ। কারণ, জোট সরকার পরিচালনায় সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ পদের নাম স্পিকার। অতএব তিনি অনড় ওই পদ পেতে। কিন্তু বিজেপি নারাজ। ফলে টানাপোড়েন চলছে। বিরোধীরাও এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করছে। ইন্ডিয়া জোটের অধিকাংশ দলই জানিয়ে দিয়েছে, তারা স্পিকার পদে নাইডুর প্রার্থীকে সমর্থন করবে। এবার কী করবেন মোদি? এদিকে বাংলা থেকে পূর্ণমন্ত্রী নেই। সুকান্ত মজুমদার উত্তর-পূর্ব উন্নয়ন ও শিক্ষা দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী। শান্তনু ঠাকুর জাহাজ রাষ্ট্রমন্ত্রী। বিরোধীরা একে সান্ত্বনা পুরস্কার বলে কটাক্ষ করেছে।