‘খবর কাগজে যেভাবে পাতাজুড়ে বিজ্ঞাপন দিতেন, সেভাবে ক্ষমা চেয়েছেন?’ ফের সুপ্রিম তোপে রামদেব

মীযান ডেস্ক: কদিন আগে সুপ্রিম কোর্টের এজলাসে দাঁড়িয়ে করজোড়ে ক্ষমা চেয়েছিলেন পতঞ্জলির কর্ণধার যোগগুরু রামদেব ও তাঁর কোম্পানির অধিকর্তা আচার্য বালাকৃষ্ণ। মনে হয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট এবার হয়ত বাবাজীকে ক্ষমা করে দেবেন। কিন্তু না, সেদিনের শুনানিতেই বোঝা গিয়েছিল যে, রামদেবের ওপর বেজায় খাপ্পা সুপ্রিম কোর্ট। রামদেবকে আদালত সেদিন বলেছিল, আপনি তো নাদান বাচ্চা নন। সব জেনেশুনেই রোগ সারানোর মিথ্যা দাবি করে সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিতেন। এই অপরাধ এত সহজে ক্ষমা করা যায় না।

এবার ফের সুপ্রিম ধাক্কা খেলেন অনুলোম-বিলোম নামে পরিচিত এবং ইউপিএ আমলে কালো টাকা উদ্ধারের অন্যতম প্রবক্তা রামদেব। এখন তারই কোম্পানিতে কালো টাকার পাহাড় জমছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যাহোক, মঙ্গলবার সর্বোচ্চ আদালতে শুনানি চলাকালে বিচারপতি বললেন, খবরের কাগজের গোটা পাতা জুড়ে আপনারা বিজ্ঞাপন দিতেন। সেইরকম বড় করে ক্ষমা চেয়েছেন? যোগগুরু রামদেবকে এভাবেই এদিন ভর্ৎসনা করল সুপ্রিম কোর্ট। সেই সঙ্গে শীর্ষ আদালতের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, রামদেবের ক্ষমা প্রার্থনা নাকচ করা হল। কারণ, ক্ষমা চাওয়ার ভঙ্গিমা মোটেও আন্তরিক ছিল না।

পতঞ্জলির বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপনের মামলায় আদালতের কাছে জনসমক্ষে লিখিতভাবে ক্ষমা চাইবেন বলে আর্জি জানিয়েছিলেন রামদেব। কিন্তু সেই আবেদনে কর্ণপাত করেনি সুপ্রিম কোর্ট। তার পরে জনসমক্ষে ক্ষমা চাওয়ার পথে হাঁটেন রামদেব। মঙ্গলবার শুনানি চলাকালীন রামদেবের আইনজীবী জানান, মোট ৬৭টি সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ক্ষমা চেয়েছেন যোগগুরু। এ জন্য ১০ লক্ষ টাকাও ব্যয় হয়েছে। এদিন আলাদা করে আদালতের কাছে গিয়েও ক্ষমাপ্রার্থনা করতে চান রামদেব ও তাঁর সহযোগী আচার্য বালকৃষ্ণ।

কিন্তু এই সওয়ালের পরেও মোটেই সুর নরম করেনি শীর্ষ আদালত। বিচারপতি হিমা কোহলির সাফ প্রশ্ন, “রামদেবের ক্ষমাপ্রার্থনাটা কি খুব স্পষ্টভাবে প্রকাশিত হয়েছে? যেভাবে খবরের কাগজের গোটা পাতা জুড়ে বড় বড় অক্ষরে পতঞ্জলির বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হত, সেরকমভাবে কি ক্ষমাপ্রার্থনার বিজ্ঞপ্তি ছাপা হয়েছে? যত টাকাই ব্যয় হয়ে থাকুক না কেন, তা নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই।”

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার শুনানির মাত্র কয়েকঘণ্টা আগেই সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ক্ষমা চেয়েছেন রামদেব। আগামী দিনে এমন ভুল হবে না বলে প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন। একই দিনে শুনানিতে কেন্দ্রকেও বিঁধেছে সুপ্রিম কোর্ট। ড্রাগস অ্যান্ড মেডিসিন অ্যাক্টের বিশেষ ধারা কেন বাতিল করা হল, কেন্দ্রের কাছে সেই প্রশ্ন করেছে শীর্ষ আদালত। 

একই সঙ্গে অন্য এক প্রসঙ্গেও এদিন পতঞ্জলিকে তোপ দেগেছে শীর্ষ আদালত। বিচারপতি কোহলি জানান, “পতঞ্জলির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার অপরাধে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের থেকে ১০০০ কোটি টাকা জরিমানা চেয়ে একটি আবেদন জমা পড়েছে শীর্ষ আদালতে। এটাও কি আপনাদের কোনও পদক্ষেপ? আমাদের কিন্তু সন্দেহ রয়েই যাচ্ছে।”

Stay Connected

Advt.

%d bloggers like this: