মীযান ডেস্ক: ভোটের আগে রাস্তাঘাটে দেখা যায় নির্বাচন কমিশনের পক্ষে কত রকম নীতিবাক্যমূলক পোস্টার, ব্যানার। কোথাও লেখা থাকে, নোটে ভোটে নয়। কোথাও লেখা থাকে, নোটে ভোট নয়, দরকারে নোটায় ভোট দিন। কোথাও বা লেখা থাকে, সকাল সকাল ভোট দিন, নিজের ভোট নিজে দিন। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় এসব কথার কথা, শুনতেই ভাল। কাজে কিছু লাগে না। সব রাজ্যেই ভোটে জিততে কোটি কোটি টাকা খরচ করে চলেছে বিভিন্ন দল। সরকারি হিসেবে যে খরচ দেখানো হয়, বাস্তবের সঙ্গে তার কোনও মিল থাকে না। কোথা থেকে এত বিপুল পরিমাণ টাকা আসে, কীভাবে খরচ হয় ইত্যাদি সব জেনেও কমিশন কোনও উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ করে না। এটাই ভোটের পরম্পরা। কিন্তু এর মাশুল দিতে হয় সাধারণ মানুষকে। ভোটের জন্য যারা পাহাড় প্রমাণ টাকা দেয়, তারা তাদের ব্যবসার মাধ্যমে তার অনেক গুণ উসুল করে নেয়। তাই নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম আকাশছোঁয়া হলেও সরকার কিছুদিন নির্বিকার থেকে যায়। সেই মওকায় মুনাফা করে নেয় কর্পোরেট মহল।
এবার জানা গিয়েছে, গুজরাটে ভোটের খরচ। যার বহর দেখলে কার না চক্ষু চড়কগাছ হবে। নির্বাচন কমিশনে বিজেপির তরফে জমা দেওয়া তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। নির্বাচন কমিশনে বিজেপি যে সরকারি হিসাব দিয়েছে, সেই অনুযায়ীই প্রধানমন্ত্রীর নিজের রাজ্যে ভোটে জিততে ২০৯ কোটি টাকা খরচ করেছে শুধু গেরুয়া শিবির। এর মধ্যে দলীয় প্রার্থীদের সরাসরি ৪১ কোটি টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে। ১৫ কোটি টাকা ব্যবহার করা হয়েছে প্রার্থী এবং তারকা প্রচারকদের যাতায়াত ও হেলিকপ্টারের ভাড়া বাবদ। বাকি ১৬০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে দলের প্রচারে।
সম্প্রতি গুজরাট বিধানসভা নির্বাচনে জিততে ২০০ কোটিও বেশি খরচ করেছে বিজেপি। এই মর্মে ভোটের ফলপ্রকাশের আগেই অভিযোগ করেছিল বিরোধীরা। এখন তারা বলছে, বিজেপি যে টাকার জোরেই গুজরাটে মসনদ দখলে রাখতে পেরেছে, সেটা প্রমাণিত। তাছাড়া এই ২০৯ কোটি টাকার যে হিসাব দেওয়া হয়েছে, সেটা সরকারি হিসাব। বিরোধীদের অভিযোগ, হিসাব বহির্ভূত খরচ এর চেয়ে অনেক বেশি। তাছাড়া অনেক প্রার্থী ব্যক্তিগতভাবেও কোটি কোটি টাকা খরচ করেছেন।
উল্লেখ্য, ২০২২ গুজরাট বিধানসভা নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় ফিরেছে বিজেপি। কার্যত ধারেকাছে ছিল না আপ ও কংগ্রেস। বিজেপি ১৫৬টি আসন জিতেছে, কংগ্রেস মাত্র ১৭ এবং আম আদমি পার্টি জিতেছে ৫টি আসন।
