মীযান ডেস্ক: এতদিন ইমরান খান বারবার অভিযোগ করেছেন, আমেরিকার সবুজ সংকেতেই নাকি তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে বলে। সেই অভিযোগে কেউ কর্ণপাত করেনি। এবার ইমরানের সেই দাবিরই পুনরাবৃত্তি করল এক মার্কিন মিডিয়া। তাদের প্রতিবেদনে সাফ বলা হয়েছে, ওয়াশিংটনের অঙ্গুলিহেলনেই ইমরান খানকে ইসলামাবাদের মসনদ থেকে উৎখাত করা হয়েছিল।
ঘটনার বিবরণে প্রকাশ, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ইমরান ছিলেন নিরপেক্ষ। কিন্তু যুদ্ধ শুরুর পরেই মস্কো সফরে যান কাপ্তান। পাশাপাশি আমেরিকাকে হুমকির সুরে বলেছিলেন, ‘তোমরা আমাদের কী মনে কর? তোমাদের চাকর? তোমাদের কথামতো চলব? পাকিস্তান চলবে ঐতিহাসিক মদীনা সনদ অনুযায়ী’। তৎকালীন পাক প্রধানমন্ত্রীর এহেন বক্তব্যকে মোটেই ভালো চোখে দেখেনি মার্কিন প্রশাসন। তাই তাঁকে গদিচ্যুত করতে নাকি চাপ সৃষ্টি করেছিল আমেরিকা। পাকিস্তান সরকারের অপ্রকাশিত নথির কথা উল্লেখ করে এমনটাই দাবি এক মার্কিন সংবাদমাধ্যমের। রিপোর্টে তারা জানিয়েছে, ২০২২ সালের ৭ মার্চ আমেরিকায় নিযুক্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত আসাদ মাজিদ খানের সঙ্গে বৈঠক করেন মার্কিন বিদেশ মন্ত্রকের দুই কর্তা। সেখানেই ইমরানের পাকিস্তানকে একঘরে করার হুমকি দেওয়া হয়। এর একমাস পরেই সংসদে অনাস্থা ভোটে হেরে যান ইমরান। হারাতে হয় প্রধানমন্ত্রীর গদি। ক্ষমতায় আসে শাহবাজ শরিফ সরকার।
সূত্রের খবর, ইমরানের ক্ষমতা হারানোর পিছনে প্রধান ভূমিকা পালন করেছিল ক্ষমতাশালী পাক সেনাবাহিনী। মার্কিন সংবাদমাধ্যমের এই দাবিকে অবশ্য নাকচ করেছে মার্কিন বিদেশ মন্ত্রক।
গত বছর মার্চে এমনটাই ইঙ্গিত দিয়ে ইমরান হাটে হাঁড়ি ভেঙে দিয়ে বলেছিলেন, তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরানোর জন্য ষড়যন্ত্র কষছে বিদেশি শক্তি। মার্কিন সংবাদমাধ্যমের প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, পাকিস্তান সরকারের এই গোপন নথিতেই রয়েছে ইমরানকে ক্ষমতাচ্যুত করার ব্লুপ্রিন্ট। সেখানে বলা হয়েছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ইমরানের অবস্থানে মোটেও খুশি ছিল না আমেরিকা। তার উপর যুদ্ধ শুরুর দু’সপ্তাহ পরেই মস্কো যান প্রধানমন্ত্রী ইমরান। এই সময় পাক রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক করেন মার্কিন আধিকারিকরা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন মার্কিন বিদেশ দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশীয় বিষয়ক ব্যুরোর সহ সচিব ডোনাল্ড লু।
সংশ্লিষ্ট সংবাদমাধ্যমের দাবি, এই বৈঠকেই তৈরি হয় ইমরানকে ক্ষমতা থেকে সরানোর নীলনকশা। ইমরানকে না সরালে পাকিস্তানকে একঘরে করার হুমকি দিয়েছিল আমেরিকা। অনাস্থা ভোট নিয়ে সেই বৈঠকে ডোনাল্ড লু বলেছিলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটে সাফল্য পাওয়া গেলে ওয়াশিংটন সবকিছু ক্ষমা করে দেবে।’ সেই বৈঠকের পরদিন থেকেই ইমরানের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে বিরোধী শিবির।