মীযান ডেস্ক: রাজ্য জুড়ে বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে “জাগিয়ে নৈতিকতার আলো, শিক্ষাঙ্গনে চলো” – এই শিরোনামে ক্যাম্পাস ক্যাম্পেইন পরিচালনা শুরু করল স্টুডেন্টস ইসলামিক অর্গানাইজেশন অফ ইন্ডিয়ার (এসআইও) পশ্চিমবঙ্গ শাখা। বৃহস্পতিবার কলকাতায় এসআইও-র রাজ্য কার্যালয়ে এই ক্যাম্পেইনের সূচনা করেন সংগঠনের রাজ্য সভাপতি সাঈদ মামুন।
একথা সত্য যে, আজকের শিক্ষাঙ্গন থেকেই সভ্য-সমাজের প্রতিনিধি হিসেবে ছাত্র সমাজের উদ্ভাবন ঘটে। আমাদের রাজ্যে বিশ্বভারতী, আইআইটি খড়গপুর, যাদবপুর, আলিয়া ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়-সহ একাধিক স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, ক্যাম্পাসগুলিতে ছাত্র-ছাত্রীরা স্বার্থপরতা, অনৈতিকতা, মানসিক অবসাদ ও হতাশার বেড়াজালে আবদ্ধ। গোটা দেশে বিভিন্ন ক্যাম্পাসে ইভটিজিং, র্যাগিং, মবলিঞ্চিং, অপহরণ ও হত্যার মতো পাশবিকতা স্বাভাবিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। সদ্য ঘটে যাওয়া এ রাজ্যের অন্যতম প্রসিদ্ধ এক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রের মর্মান্তিক পরিণতি এই বাস্তবতার জ্বলন্ত উদাহরণ। সেই সাথে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বর্ষবরণের নামে চলছে মাদকতা আর অশ্লীলতার ছড়াছড়ি। এহেন পরিস্থিতে ছাত্র-যুবকদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব, মেলবন্ধন ও সামাজিক দায়বদ্ধতার অনুভূতি জাগিয়ে তুলতেই এসআইও পশ্চিমবঙ্গের এই অভিযান। যার অন্যতম লক্ষ্য হল, শিক্ষাঙ্গনে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ও ছাত্রদের মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধের চেতনা ফিরিয়ে ফিরিয়ে আনা।
এই ক্যাম্পেইন শুভারম্ভ উপলক্ষে সংগঠনের রাজ্য সভাপতি সাঈদ মামুন বলেন, ‘বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা ব্যবস্থার বেহাল দশা এক দানবিক রূপ ধারণ করেছে। এর অন্যতম কারণ হল অনর্গল স্কুলছুট’। পরিসংখ্যান বলছে এ বছর মাধ্যমিকে গতবছরের তুলনায় ৪ লক্ষাধিক ছাত্র ড্রপআউট হয়েছে। মোবাইলে আসক্তি, দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ রাখা, অনলাইনে পড়াশোনা ও ছাত্র-শিক্ষকদের মধ্যে বিচ্ছিন্নতা ইত্যাদি কারণে শিক্ষার প্রতি পড়ুয়াদের আকর্ষণ ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে। অর্থনৈতিক মন্দা আর বেকারত্বের কঠিন সময়ে দিশাহীন যুবসমাজ হারিয়ে ফেলেছে শিক্ষার প্রকৃত মূল্য। এহেন পরিস্থিতির পরিবর্তন করতেই আজ মশাল হাতে ময়দানে নেমেছে এসআইও’। ছাত্র বৈঠক, হাতেলেখা পোস্টার, স্কুল-হোস্টেল ভিজিট, নৈতিক-মূল্যবোধ ভিত্তিক প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এসআইও রাজ্যজুড়ে এই কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য পরিকল্পনা করেছে। উল্লেখ্য, ১৭ থেকে ৩১ আগস্ট ২০২৩ পর্যন্ত চলবে এসআইও’র এই অভিযান।