দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবথেকে বড় মাপের মানবিক সংকট
মীযান ডেস্ক: মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গা দমন-পীড়নের ছয় বছর পূর্ণ হল। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট আর্থাৎ ৬ বছর আগে আজকের দিনেই রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চালিয়ে বার্মিজ সেনারা প্রায় ১০ লক্ষ রোহিঙ্গা মুসলিমকে গণধর্ষণ ও গণহত্যার মাধ্যমে দেশছাড়া করেছিল। এই নারকীয় বর্বরতাকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবথেকে বড় মাপের মানবিক সংকট বলে অভিহিত করা হয়। তাই শুক্রবার এই দিনটিকে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা শরণার্থীরা কালো দিবস ও গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন করলেন।
এদিন সকাল ১০টা নাগাদ বৃষ্টি উপেক্ষা করে উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ‘হোপ ইজ হোম’ ক্যাম্পেইন পালন করেছে রোহিঙ্গারা। সরেজমিনে কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দেখা যায়, ‘হোপ ইজ হোম’ ক্যাম্পেইন উপলক্ষে আশপাশের ক্যাম্প থেকে সকাল থেকেই লোকজন জড়ো হতে শুরু করেন। সমাবেশে পুরুষদের পাশাপাশি রোহিঙ্গা নারী, শিশুরাও যোগ দেন। পোস্টার, প্ল্যাকার্ডে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার দাবি তুলে ধরে।
জ্বালাময়ী বক্তব্য দেন রোহিঙ্গা নেতা মাস্টার শোয়াইব, মাস্টার নুরুল আমিন, মাস্টার জুবায়ের, মোহাম্মদ ইউসুফ, মাস্টার কামাল প্রমুখ। সমাবেশে আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যানিটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জোবায়ের বলেন, ‘আমরা আমাদের নিজ দেশে ফিরে যেতে চাই। ৬ বছর আগে এই কালো দিনে মিয়ানমার জান্তা সরকার ও তাদের কুখ্যাত সেনাবাহিনী আমাদের ওপর গণহত্যা চালিয়েছে। ভিন দেশে আর কত বছর থাকব। আর থাকতে চাই না। আমরা আমাদের স্বদেশে ফিরতে চাই।’
রোহিঙ্গা মানবাধিকারকর্মী সায়েদ উল্লাহ বলেন, ‘মিয়ানমার আমাদের দেশ। অনতিবিলম্বে আমাদের নিজ দেশে ফেরত নিতে হবে। এতদিন আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞতা জানাই, আন্তর্জাতিক মহলকে প্রত্যাবাসন সফল করতে বাংলাদেশের পাশে থাকতে হবে।’
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট বার্মিজ সেনাবাহিনী রাখাইন অঞ্চলের মংডু, বুচিথং ও রাসেথং জেলার রোহিঙ্গা মুসিলমদের ওপর নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণ ও অকথ্য নির্যাতন শুরু করে। প্রাণে বাঁচতে প্রতিবেশি বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়ায় রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অনুপ্রবেশের ঢল নামে। তখন সীমান্ত অতিক্রম করে প্রায় সাত লক্ষাধিক রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশের কক্সবাজারে এসে আশ্রয় নেয়। ওই দিনটিকে স্মরণে কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারা ‘রোহিঙ্গা জেনোসাইড রিমেম্বার ডে’ পালন করে আসছে।