মীযান ডেস্ক: অভিযোগ অনেকদিন ধরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরপাক খাচ্ছিল, ইথার তরঙ্গে ছুটে বেড়াচ্ছিল। অনেকেই বলছিলেন, করোনা একটা গ্লোবাল কনস্পিরেসি বা বিশ্বজুড়ে ষড়যন্ত্র। এমনও শোনা যাচ্ছিল কোভিড ভ্যাকসিনগুলো সব মানুষ মারা কল, ইত্যাদি। পাইকারি হারে ভ্যাকসিন দিয়ে মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলার অভিযোগও উঠেছিল বিভিন্ন মহল থেকে। এবার একটা ভ্যাকসিন কোম্পানী খোদ আদালতে স্বীকার করল, যে তাদের তৈরি ভ্যাকসিনের সাইড এফেক্ট বা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছিল বা আছে। যা থেকে নানা রকম ব্যাধির জন্ম হতে পারে। অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির তৈরি কোভিড ভ্যাকসিন কোভিশিল্ডের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। এই টিকার ডোজে বিরল রোগের আশঙ্কাও আছে। আদালতে এমনটাই স্বীকার করে নিতে বাধ্য হল প্রস্তুতকারী সংস্থা অ্যাস্ট্রাজেনেকা।
করোনা পরিস্থিতিতে এই ব্রিটিশ-সুইডিশ সংস্থাটি বাজারে ভ্যাকসিন এনেছিল। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার যৌথ উদ্যোগে তৈরি কো-ভ্যাকসিন বিশ্বব্যাপী কোভিশিল্ড এবং ভ্যাক্সেজেরিয়া নামে বিক্রি হয়। ভারতে তা বিক্রি হয়েছিল কোভিশিল্ড নামেই। পরে অভিযোগ ওঠে, এই টিকার নাকি মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। ফলে এর ট্রায়াল বন্ধও করে দেওয়া হয়েছিল একসময়। যদিও সংস্থাটি প্রথমে অভিযোগ মানতে চায়নি। ২০২৩ সালে অ্যাস্ট্রাজেনেকার বিরুদ্ধে প্রথম মামলা দায়ের করেন জেমি স্কট নামে এক ব্যক্তি।
তাঁর অভিযোগ, ২০২১ সালের এপ্রিলে ভ্যাকসিন নেওয়ার পরে তাঁর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয় ও তা জমাট বেঁধে যায়। এর ফলে তাঁর মস্তিষ্কে স্থায়ী ক্ষত তৈরি হয়। স্বাভাবিক কার্যক্ষমতাও কমে গিয়েছে বলে অভিযোগ জেমির। উল্লেখ্য, গত ফেব্রুয়ারি মাসে অ্যাস্ট্রাজেনেকা আদালতে একটি নথি জমা দেয়। সেখানে তারা স্বীকার করেছে যে, তাদের তৈরি কোভিড ভ্যাকসিনের কারণে টিটিএস বা থ্রম্বোসিস উইথ থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া সিনড্রোমের মতো বিরল সমস্যা হতে পারে। এই রোগে আক্রান্ত হলে রক্তে অণুচক্রিকার পরিমাণ কমে যায় এবং রক্ত জমাট বেঁধে যায়। আদালতে জমা করা নথিতে অ্যাস্ট্রাজেনেকা বলেছে, ‘আমরা এটি স্বীকার করছি যে, অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার কারণে খুব বিরল রোগ হতে পারে।’