মীযান ডেস্ক: ফ্রান্সের সবচেয়ে বড় মুসলিম হাইস্কুলে আর্থিক অনুদান দেওয়া বন্ধ করছে দেশটির সরকার। তাদের দাবি, প্রশাসনিক ব্যর্থতা ও বিতর্কিত শিক্ষা ব্যবস্থার কারণে তারা এই পদক্ষেপ করতে বাধ্য হয়েছে। তবে শিক্ষার অধিকার নিয়ে আন্দোলন করা বিভিন্ন সমাজসেবী সংস্থা ও সংগঠনের কর্মকর্তারা বলছেন, মুসলিমদের বিরুদ্ধে চলমান অভিযানের অংশ হিসেবে এই কাজ করছে ফ্রান্সের ইমানুয়েল ম্যাক্রো সরকার।
আজ থেকে ২০ বছর আগে ২০০৩ সালে প্রথম মুসলিম হাইস্কুল হিসেবে যাত্রা শুরু করে বেসরকারি স্কুল অ্যাভেরস। ফ্রান্সের উত্তরাঞ্চলীয় শহর লিলিতে স্থাপিত এই স্কুলে ৮০০-রও বেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। এই স্কুলে নিয়মিত ফরাসি কারিকুলাম ছাড়াও তারা ধর্মবিষয়ক বিশেষ ক্লাস করত। তবে চলতি বছর অক্টোবরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, স্কুলটি প্রশাসনিক ও আর্থিক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। তাদের শিক্ষা কার্যক্রমের সঙ্গে ফরাসি ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির অমিল রয়েছে বলেও জানিয়েছে ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। তবে এর জেরে সম্প্রতি চাঞ্চল্য ছড়ালে এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউরোপ মহাদেশে সবথেকে বেশি মুসলিমের বসবাস ফ্রান্সে। মুসলিমদের একটা বড় অংশের ধারণা, ২০১৫ সালের ভয়াবহ হামলার পর ফ্রান্স সরকার মুসলিমদের ওপর নানাভাবে নানা অছিলায় দমন পীড়ন জারি রেখেছে। চলতি বছর সেপ্টেম্বরে শিক্ষামন্ত্রক থেকে মুসলিম নারীদের আবায়া পরিহিত অবস্থায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসা নিষিদ্ধ করা হয়। একইসঙ্গে সরকারি অফিসে বুরকা, হিজাব পরা নিষিদ্ধ করা হয়। তাছাড়া সমুদ্রতটে কিংবা সুইমিংপুলে বুরকিনি নামক শালীন পোশাক পরে স্নান করাও নিষিদ্ধ করা হয়। এইসব নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে জেল-জরিমানাও করা হয়।
এদিকে অ্যাভেরস স্কুলের প্রধান শিক্ষক এরিক দুফোর বলেন, সরকারি তরফে এখনও কোনো নির্দেশিকা পাননি তারা। এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে তারা আদালতে এই সিদ্দান্তের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ করবেন বলেও জানান তিনি।