ফিলিস্তিনে ইসরাইলি হামলার বিরুদ্ধে গর্জে উঠল কলকাতা ‘ফ্রেন্ডস অফ প্যালেস্টাইন’-এর ডাকে ধর্মতলায় বিক্ষোভ সমাবেশ

মীযান ডেস্ক: ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের বর্বর সামরিক হামলার প্রতিবাদে গর্জে উঠল কলকাতা। শুক্রবার ১৩ অক্টোবর ধর্মতলার টিপু সুলতান মসজিদের পাশে, স্টেটসম্যান অফিসের সামনে জমায়েত হন বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ। এই জমায়েতের ডাক দেয় ‘ফ্রেন্ডস অফ প্যালেস্টাইন’। জমায়েতে যোগদান করে বেশ কিছু সামাজিক সংগঠন এবং খ্রিস্টান, শিখ, হিন্দু ধর্মগুরুরাও। মহিলাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। নারী-পুরুষ মিলিয়ে বহু মানুষের জমায়েত হয় আজকের এই বিক্ষোভে। মূলত কলকাতা, হুগলী, হাওড়া, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা থেকে উদ্যোক্তা সংগঠন ‘ফ্রেন্ডস অফ প্যালেস্টাইন’ ও সহযোগী বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের কর্মীরা আসেন এই প্রতিবাদী সমাবেশে। বক্তব্য রাখেন জামাআতে ইসলামী হিন্দের সর্বভারতীয় সম্পাদক জনাব মাওলানা আব্দুর রফিক, আমীরে হালকা (রাজ্য সভাপতি) ডা. মসিহুর রহমান, বিশিষ্ট কবি ও সাহিত্যিক প্রসূন ভৌমিক, মানবাধিকার কর্মী ছোটন দাস, শিখ ধর্মগুরু জিতেন্দ্র পাল সিং, ফাদার অলোক মুখার্জি, জামাআতে ইসলামী হিন্দের সাবেক আমীরে হালকা সাহিত্যিক নুরুদ্দিন শাহ, বিশিষ্ট সমাজসেবী ও প্রাবন্ধিক আব্দুল আজিজ, অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান, সমাজসেবী মুরাদ হোসেন, তরুণ সাংবাদিক নিজাম পারভেজ প্রমুখ। তাঁরা বক্তব্যে সকলেই একযোগে গাজা উপত্যকা তথা ফিলিস্তিনের ওপর ইসরাইলী বর্বরতা, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস, পাশবিক জুলুম, গাজোয়ারী জবরদখল ও আগ্রাসনের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠেন। অবিলম্বে রাষ্ট্রসংঘ এবং আন্তর্জাতিক মহলকে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি নৃশংসতা ও বর্বরতা বন্ধে কড়া পদক্ষেপের দাবি জানান। একইসঙ্গে মধ্যপ্রাচ্য ইস্যুতে ভারত সরকারের নীতি ও অবস্থান স্বচ্ছতার সঙ্গে বিবেচনার আহ্বান জানানো হয়। কেউ কেউ ইসরাইলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক বিচ্ছেদের দাবিও তোলেন।

উল্লেখ্য, শনিবার ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিন-ইসরাইল সংঘর্ষ শুরু হয়। যাতে এ পর্যন্ত উভয় পক্ষের প্রায় হাজার তিনেক মানুষের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। সংঘর্ষ শুরুর পরদিন রবিবার তড়িঘড়ি নিরাপত্তা পরিষদ জরুরী বৈঠকে বসে। অথচ সুদীর্ঘ সাড়ে সাত দশক ধরে ইসরাইল যে গাজা সহ ফিলিস্তিনে নিয়মিত নারকীয় হামলা ও হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে – সে ব্যাপারে রাষ্ট্রসংঘের কোনও মাথাব্যথা বা হেলদোল নেই। বিশ্বের শীর্ষ আন্তর্জাতিক সংস্থার এহেন দ্বিচারিত ও বৈষম্যমূলক আচরণের তীব্র নিন্দা করেন বক্তাগণ। পাশাপাশি গান্ধীজী এবং অটল বিহারী বাজপেয়ীর নীতি মেনে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার পক্ষে জোরালো অবস্থান ও সমর্থন দিতে নরেন্দ্র মোদি সরকারকে আহ্বান জানান বক্তারা। উপস্থিত জনতার ভিড় ও স্লোগান ছিল মুহুর্মুহু। দাবি উঠে, ইজরাইলের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধের। ভারত সরকার সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও দখলদার শক্তির বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করুক – এই দাবি সম্মিলিতভাবে ওঠে এ দিনের প্রতিবাদী সমাবেশ থেকে।

Stay Connected

Popular News

Advt.

%d bloggers like this: