মীযান ডেস্ক: জি-২০ সম্মেলন নিয়ে নানা মুনির নানা মত। কেউ বলছে সফল হয়েছে শীর্ষ সম্মেলন, কেউ বলছে ব্যর্থ, কেউবা বলছে বিশ্বকে সংকট-মুক্ত করতে নতুন কিছু দিশখা দেখাতে পারেনি এই সম্মেলন। আর আয়োজক দেশ ভারত দাবি করছে একশো শতাংশ সফল। বিশেষ করে জি-২০ সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে সুচারুভাবে এই আন্তর্জাতিক সম্মেলন সফল করে বিশ্বগুরু হওয়ার পথ প্রশস্ত হয়েছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। এই প্রেক্ষিতে চীন এক বিস্ফোরক অভিযোগ করেছে। প্রতিবেশি এই দেশটি বলেছে, জি-২০র মঞ্চকে ব্যবহার করে নিজেদের ঢাক নিজেরাই পেটাচ্ছে ভারত। এতে জি-২০ র উদ্দেশ্য ব্যর্থ হয়েছে। বেজিং থেকে চীনা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনস্ত এক সংস্থা এভাবেই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তাদের মতে, আন্তর্জাতিক মঞ্চে আঞ্চলিক ভূ-রাজনৈতিক সমস্যার কথা উল্লেখ করে ভবিষ্যতে সমস্যাকে আরও বাড়িতে তোলার পথ সুগম করেছে নয়াদিল্লি। উল্লেখ্য, সদ্যসমাপ্ত জি-২০ সম্মেলনে যোগ দেননি চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং। বেজিংয়ের দাবি, গোটা সম্মেলন জুড়ে চিনের স্বার্থকে আঘাত দেওয়ার চেষ্টা করেছে ভারত। তাদের প্রস্তাবিত বেল্ট অ্যান্ড রান প্রকল্প নিয়েও জি-২০-এর মঞ্চে নেতিবাচক মন্তব্য করেছে ভারত। অন্যদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, গর্ব করার মতো কিছুই হয়নি জি-২০ সম্মেলনে। যদিও সম্মেলনের দ্বিতীয় ও শেষদিনে প্রকাশিত যৌথ ঘোষণায় সকলেই সাফ জানান, ইউক্রেনে শান্তি চান তাঁরা। সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন বিরোধী বিবৃতি দেওয়া হলেও সেখানে রাশিয়ার নাম উল্লেখ না করায় বিষয়টি পছন্দ হয়নি ইউক্রেনের। কিয়েভ প্রশাসন একে ধরি মাছ না ছুঁই পানির মতো বিবৃতি বলে অভিহিত করেছে। জি-২০ বৈঠকে রাষ্ট্রনেতাদের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিশ্বের যে কোনও প্রান্তে সার্বভৌমত্ব, একতা বজায় রাখতে সকলে বদ্ধপরিকর। সর্বত্র শান্তি, স্থিতিশীলতা ও অখণ্ডতা বজায় রাখতে হবে। এক পৃথিবী, এক পরিবার, এক ভবিষ্যৎ – এই পন্থায় প্রতিবেশীদের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সুসম্পর্ক বজায় রাখতে হবে। এদিকে জি-২০ সম্মেলনে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের বিষয়টি প্রধান ইস্যু না হয়ে ওঠায় বেজায় খুশি রাশিয়া। জি-২০ সম্মেলনে উপস্থিত রুশ বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লেভরভ বলেন, ভারতে আয়োজিত জি-২০ সম্মেলন ইউক্রেন সর্বস্ব হতে দেওয়া হয়নি। তাই রাজনীতির ঊর্ধ্বে এই আন্তর্জাতিক সম্মেলন ‘সফল’ হয়েছে।
