হুগলীর পাঁচবেড়িয়ায় মরহুম আল্লামা দিলাওয়ার হোসাইন সাঈদী (রহ.) সাহেবের গায়েবানা জানাযা

মীযান ডেস্ক: হুগলী জেলার পাঁচবেড়িয়া ফুটবল ময়দানে মরহুম আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাঈদী-র গায়েবানা জানাযা সম্পন্ন হয় মঙ্গলবার। জানাযায় ইমামতি করেন বিশিষ্ট সমাজসেবী সেখ মুহাম্মদ তাহের উদ্দিন। জানাযার পূর্বে সেখানে জমায়েত হওয়া লোকদের সামনে তিনি মরহুম আল্লামা সাঈদী সাহেবের জীবন ও ইসলামী আন্দোলন সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য পেশ করেন। তিনি বলেন, বাতিলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আপসহীন একজন মর্দে মুজাহিদ ছিলেন আল্লামা সাঈদী। জালিমের বিরুদ্ধে যিনি ছিলেন সব সময় আপসহীন। আল্লাহ রব্বুল আলামীন মরহুম আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাঈদী সাহেবকে জান্নাতুল ফেরদাউস দান করুন।

উল্লেখ্য, ১৪ আগস্ট সোমবার রাত ৮.৪০ মিনিট নাগাদ ইন্তেকাল হয় আল্লামা সাঈদীর। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়, আগের দিন রবিবার বিকালে বুকে ব্যথা অনুভব করলে তাঁকে ঢাকার পিজি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তারপর এক পর্যায়ে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তিনি মারা যান। যদিও তাঁর চিকিৎসায় গাফিলতি এবং তাঁকে নাকি পরিকল্পনা করে রহস্যজনকভাবে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয় বলে বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামী এবং মরহুমের পরিবারের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর সোয়া একটা নাগাদ পিরোজপুরে তাঁর জন্মভূমি এলাকায় তাঁরই হাতে তৈরি করা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংলগ্ন ময়দানে তাঁকে সমাহিত করা হয়। এখানেই তাঁর এক ভাই, বড় ছেলে, এক পুত্রবধূরও কবর রয়েছে। তাঁর জানাযায় লক্ষ লক্ষ মানুষ অংশ নেন।

বাংলাদেশ ছাড়াও প্রতিবেশি ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, মালদ্বীপ, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া সহ বিশ্বের অন্তত ৮০টা দেশে গায়েবানা জানাযা হয়। সবথেকে উল্লেখযোগ্য হল পবিত্র কাবা শরীফেও তাঁর গায়েবানা জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। উল্লেখ্য, কাবা শরীফে এখনও পর্যন্ত বিশ্বের তিনজন মানুষের গায়েবানা জানাযা হয়েছে। তাঁরা হলেন নবীজী (সা.) এর সময়কালে নাজ্জাসীর বাদশাহ, জামাআতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা সাইয়েদ আবুল আলা মওদূদী (রহ.) এবং সর্বশেষ আল্লামা সাঈদী সাহেব। দিলাওয়ার হোসায়েন সাঈদী ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর এবং দুবারের প্রাক্তন সাংসদ। এছাড়াও তিনি ছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ, বিশিষ্ট আলেমেদ্বীন, বিশ্ববন্দিত ওয়াজীন, ঐতিহাসিক তাফসীরুল মাহফিলের প্রবাদপ্রতীম বক্তা। তাঁর রহস্যমৃত্যুতে সমগ্র মুসলিম উম্মাহ শোকে বিহ্বল হয়ে গেছে।

২০১০ সালে বাংলাদেশ সরকার তাঁকে কয়েকদফা ফৌজদারী ও দেশদ্রোহের অভিযোগে জেলবন্দি করে। সেই থেকে গত ১৩ বছর একটানা তিনি কারাগারে ছিলেন। প্রথমে তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলেও পরে বিশ্বজোড়া প্রতিক্রিয়া দেখে সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

Share :

Stay Connected

Advt.

%d bloggers like this: