যুদ্ধবিরতি চুক্তি মেনে ২৪ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস, ৩৯ বন্দিকে ছাড়ল ইজরায়েল, উৎসব মধ্যপ্রাচ্যে

মীযান ডেস্ক:  চার দিনের যুদ্ধবিরতির চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ২৪ জন জিম্মিকে ছেড়ে দিয়েছে হামাস। মুক্তি প্রাপ্তদের মধ্যে ১৩জন ইজরায়েলি এবং থাইল্যান্ডের ১০ নাগরিক ও ফিলিপাইনের একজন নাগরিক। একইসঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী শুক্রবার ইজরায়েলের কারাগার থেকে ৩৯ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকেও মুক্তি দেওয়া হয়েছে বলে খবর। এর মধ্যে রয়েছে ২৪জন তরুণী ও মহিলা এবং ১৫জন কিশোর ও তরুণ।

>> মুক্ত ১৩ ইজরায়েলি এবং থাইল্যান্ডের ১০ নাগরিক ও ফিলিপাইনের একজন জিম্মি।

>> মুক্ত ৩৯ জন ফিলিস্তিনির মধ্যে ২৪জন তরুণী ও মহিলা এবং ১৫জন কিশোর ও তরুণ।

>> ৪ দিনের যুদ্ধবিরতিতে হামাস ৫০ জন জিম্মিকে ও ইজরায়েল ১৫০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেবে।

>> মঙ্গলবার থেকে আবারও গাজায় বোমা ফেলে ধ্বংসযজ্ঞ ও গণহত্যাযজ্ঞ চালাবে

বিভিন্ন সংবাদ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় হামাস শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে ১৩ জন ইজরায়েলি জিম্মিকে আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা রেডক্রসের কর্মকর্তাদের হাতে তুলে দিয়েছে। রাফাহ সীমান্ত হয়ে এসব মানুষ প্রথমে মিসর যাবেন, সেখান থেকে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে। থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিন বলেছেন, ‘প্রতিরক্ষা বাহিনী ও বিদেশ মন্ত্রকের মাধ্যমে ইতিমধ্যে ১০ থাই জিম্মির মুক্তির ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছি।’

স্থানীয় সময় শুক্রবার সকাল থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। ইজরায়েল ও হামাসের মধ্যে হওয়া চুক্তি অনুযায়ী যুদ্ধবিরতি থাকবে চার দিন। এই সময়ের মধ্যে হামাস অন্তত ৫০ জন জিম্মিকে ছেড়ে দেবে এবং বিনিময়ে ইজরায়েল ১৫০ ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেবে। জানা গিয়েছে, হামাসের কব্জা থেকে মুক্ত হয়ে ইহুদি ও অন্যান্য নাগরিকরা স্বীকার করেন, তাদের সঙ্গে খুব মানবিক আচরণ করা হয়েছে। কিন্তু ইজরায়েল থেকে ফেরা গাজাবাসী তথা ফিলিস্তিনিরা অভিযোগ করেছেন, তাদের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, টানা ৪৮দিন যুদ্ধ চলার পর কাতারের মধ্যস্থতায় ৪ দিনের বিরতি হয়েছে। ইজরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট রণহুংকার দিয়ে বলেছেন, মঙ্গলবার থেকে ফের যুদ্ধ শুরু হবে। যদিও আন্তর্জাতিক জনমতের চাপে পড়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, তিনি যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর ব্যাপারে আশাবাদী।

যুদ্ধবিরতির প্রথমদিন শুক্রবার রাতে গাজা উপত্যকার কোথাও ইজরায়েলি বাহিনী হামলা করেনি বা বোমা ফেলেনি। ফলে দেড় মাস পর এই রাতে গাজাবাসী প্রথম উদ্বেগহীন রাত কাটিয়েছেন। নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে উঠে শনিবার সকালে যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় দিনে তারা রীতিমতো বিভিন্ন জায়গায় আনন্দোৎসবে মেতে ওঠে। তবে যে চারদিনের যুদ্ধবিরতির পর মঙ্গলবার থেকে আবারও যুদ্ধ শুরু হবে, নাকি সেই দুশ্চিন্তায় তাদের স্বস্তি ফিরছে না। ভবিষ্যত নিয়ে তারা সন্দিহান। এখনও সবার চোখে-মুখে আতঙ্ক। ইজরায়েলের এই একতরফা যুদ্ধে এখন পর্যন্ত প্রায় ১৫ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে ৭ অক্টোবর হামাসের রকেট হামলায় ইজরাইলে নিহতের সংখ্যা ১২০০। সেদিনের পর হামাস আর কোন হামলা করেনি। কিন্তু টানা ৪৭দিন ধরে যুদ্ধ চালিয়েই যাচ্ছে ইজরায়েল।

Stay Connected

Advt.

%d bloggers like this: