হাসিনার ‘ফ্যাসিস্ট’ দলের কোনো স্থান নেই: ইউনূস

মীযান ডেস্ক: ফ্যাসিবাদের সকল বৈশিষ্ট্য প্রদর্শনের জন্য ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচারী নেত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগকে অভিযুক্ত করে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, দেশের রাজনীতিতে তাদের কোনো স্থান নেই। ফিনান্সিয়াল টাইমস’কে এক সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেন, এখনই তার সরকার হাসিনাকে দিল্লির কাছে ফেরত চাইবে না। কেননা, বিষয়টি প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।
ড. ইউনূস বলেছেন, নিশ্চিতভাবেই বাংলাদেশে স্বল্পমেয়াদে তার কোনো জায়গা হবে না, তার দল আওয়ামী লীগেরও কোনো জায়গা হবে না। কেননা, তারা দেশের জনগণ এবং রাজনৈতিক কলকব্জা নিয়ন্ত্রণ করেছে। তারা নিজেদের সুবিধার জন্য রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করেছে। সুতরাং তাদের মতো কোনো ‘ফ্যাসিস্ট দল’ গণতান্ত্রিক ধারায় স্থান পাবে না।
রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নির্বাচনে কারচুপি, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং হাসিনার ১৫ বছরের স্বৈরশাসনে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান দখলের অভিযোগ এনেছে। ৫ আগস্ট হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর তার দলকে রাজনীতি থেকে সাময়িক নিষিদ্ধের আলোচনাও শুরু হয়েছে। অনেকে বলছেন, রাজনীতিতে ফিরতে হলে আওয়ামী লীগকে সংস্কারের মধ্য দিয়ে আসতে হবে। আবার কারো কারে মতামত, দলটিকে চিরতরে নিষিদ্ধ করা উচিত।
ড. ইউনূসের ধারণা আওয়ামী লীগ ভেঙে যেতে পারে। তবে তিনি এ বিষয়েও জোর দিয়েছেন যে, অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে হাসিনার দলের কোনো ভাগ্য বদল হবে না। কেননা বর্তমান সরকার নির্বাচিত ‘রাজনৈতিক সরকার নয়’। তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কি-না তা নির্ধারিত হবে রাজনৈতিক দলগুলোর ‘ঐক্যমতের’ ভিত্তিতে। এক্ষেত্রে তাদের রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে।
উল্লেখ্য, ২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল জয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে টার্গেট করেছিলেন হাসিনা। এতে ব্যাপক সমালোচিত হয়েছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী।
হাসিনার পতনের ফলে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে বাংলাদেশের। হাসিনা-সহ তার দলের ৪৫ নেতার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এই আদালতের রায় ঘোষণার পরই ভারতের সঙ্গে হাসিনার প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে আলাপ শুরু করবে অন্তর্বর্তী সরকার। উল্লেখ্য, হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর তার দলের অনেক নেতা-কর্মী দেশ ছেড়েছেন অথবা আত্মগোপনে রয়েছেন। অন্যদিকে, নরেন্দ্র মোদিকে বাংলাদেশে স্বাগত জানিয়ে ইউনূল বলেছেন, দুই প্রতিবেশীর যেমন সম্পর্ক থাকা উচিত তা সর্বোত্তম পন্থায় থাকতে হবে।

Stay Connected

Advt.

%d bloggers like this: