মীযান ডেস্ক: জম্মু কাশ্মীরের প্রাক্তন রাজ্যপাল তথা বিজেপি নেতা সত্যপাল মালিক বলেছেন, আমি গ্যারান্টি দিচ্ছি ২৪ সালের নির্বাচনে জিতে নরেন্দ্র মোদি আর সরকার করতে পারবে না। ২০১৮ সালের আগস্ট থেকে ২০১৯ সালের অক্টোবর পর্যন্ত তিনি কাশ্মীরের রাজ্যপাল ছিলেন। তাঁর সময়েই ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ পুলওয়ামা হামলার ঘটনা হয়েছিল। সম্প্রতি তিনি পুলওয়ামা নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ করে বলেন, “পুলওয়ামা হামলার ঘটনার নেপথ্যে মোদি-শাহরা ছিলেন। কিন্তু আমাকে মুখ খুলতে নিষেধ করা হয়েছিল।” এর কিছুদিন পর তিনি আবারও এক বিস্ফোরক অভিযোগ করে বলেন, যারা পুলওয়ামা ঘটাতে পারে, তারা নতুন তৈরি রামমন্দিরকে ভেঙে দিয়ে মুসলিমদের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দেশজুড়ে দাঙ্গা বাধাতেও পারে। ২৪ এর লোকসভা নির্বাচনে জেতার জন্য মোদি-শাহরা এমনও ঘটাতে পারে বলে মন্তব্য করেছিলেন প্রাক্তন বিজেপি নেতা সত্যপাল মালিক।
এমনকী নরেন্দ্র মোদি জমানায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে মুখ খুলে তাঁকে সিবিআই নোটিসও পেতে হয়েছে। তাতে অবশ্য বিন্দুমাত্র দমেননি সত্যপাল। বরং লোকসভা ভোটের আগে কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীর সামনে বসে আবারও এক বিস্ফোরক দাবি করলেন তিনি—‘আর তো মাত্র ৬ মাসের ব্যাপার। লিখে দিচ্ছি, মোদি সরকার বা বিজেপি আর ক্ষমতায় ফিরবে না।’ এর আগে তিনি লোকসভা ও রাজ্যসভার সাংসদ ছিলেন। তারপর মেঘালয়, বিহার, উড়িষ্যা, কাশ্মীর বিভিন্ন রাজ্যে রাজ্যপালের দায়িত্ব পালন করেছেন। বুধবার সত্যপাল মালিকের সেই বিতর্কিত সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয় রাহুল গান্ধীর ইউটিউব চ্যানেলে। সেখানে ২৮ মিনিট ধরে পুলওয়ামা হামলা, ৩৭০ ধারা বিলোপ করে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ রাজ্যের তকমা প্রত্যাহার, মণিপুর হিংসা, কৃষক বিদ্রোহ, দুর্নীতি সহ একাধিক বিষয়ে কথা বলতে দেখা গিয়েছে দু’জনকে।
জম্মু ও কাশ্মীরের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে সত্যপাল বলেন, বলপ্রয়োগ বা সেনা দিয়ে ওখানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে না। মানুষের বিশ্বাস-আস্থা অর্জনই একমাত্র পথ। এর জন্য যত দ্রুত সম্ভব ৩৭০ ধারা ফেরানো দরকার। এই ধারা বিলুপ্ত করার পর অনেক বেশি ভুগতে হয়েছে কাশ্মীরবাসীকে। রাজ্য ভেঙে দু’টি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠন নিয়ে চাঞ্চল্যকর দাবি করে সত্যপাল বলেন, কেন্দ্র ভেবেছিল, উপত্যকার পুলিস বিদ্রোহ ঘোষণা করতে পারে। তাই তড়িঘড়ি ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
পুলওয়ামা ইস্যুতে মোদি সরকারকে কাঠগড়ায় তুলে এদিনও তিনি বলেন, ‘সিআরপিএফ পাঁচটি বিমান চেয়েছিল। আমাকে বললে, তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা করে দিতাম। বরফে আটকে পড়া পড়ুয়াদের জন্য হেলিকপ্টার পাঠিয়েছিলাম। সিআরপিএফের আবেদন চারমাস ধরে পড়েছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে। তারপর তা খারিজ হয়ে যায়। আক্ষেপের সুরে সত্যপাল বলেন, ‘আমি নিউজ চ্যানেলে এই নিয়ে মুখ খুলেছিলাম। ভেবেছিলাম, আমার বিবৃতি তদন্তে প্রভাব ফেলবে। কিন্তু, নিরপেক্ষ তদন্তই হল না।’ তাঁর দাবি, সিআরপিএফ কনভয়ের নিরাপত্তায় খামতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল আমাকে মুখ খুলতে বারণ করেছিলেন। নির্বাচনের স্বার্থে গোটা বিষয়টিকে ব্যবহার করা হয়।