মীযান ডেস্ক: মাত্র কদিন আগেই নয়াদিল্লি সফর করেছিল বাংলাদেশের এক উচ্চপদস্থ প্রতিনিধিদল। লীগের সহ সভাপতি ও কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে ৬ থেকে ৯ আগস্ট ভারত সফর করে পাঁচ সদস্যের টিম। তারা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের পাশাপাশি বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা সহ গেরুয়া শিবিরের একাধিক শীর্ষ নেতার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেই বৈঠক থেকেই ওপারের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের বিশ্বাস, সে দেশের আসন্ন পার্লামেন্ট নির্বাচনে বিজেপি তথা ভারতের কেন্দ্র সরকার তাদের পাশেই থাকবে। উল্লেখ্য, প্রায় বছর খানেক আগে তাদের বিদেশমন্ত্রী বলেছিলেন, হাসিনা সরকারকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে ভারত যেন প্রয়োজনীয় সবরকম সহায়তা করে, এই আবেদন জানিয়েছি।
ইতিমধ্যেই বাংলাদেশে শুরু হয়েছে সাধারণ নির্বাচনের তোড়জোড়। চলতি বছরের শেষ দিকেই হতে চলেছে ভোটযুদ্ধ। লড়াইয়ের প্রস্তুতি শুরু করেছে শাসক-বিরোধী উভয়েই। এই প্রেক্ষাপটে গণতন্ত্রের উৎসবে ‘পাশে থাকবে ভারত’ বলেই বিশ্বাস আওয়ামী লীগের। এদিকে শুক্রবার নয়াদিল্লি সফর করে ফিরে গিয়ে ধানমান্ডিতে সাংবাদিক সম্মেলনে মন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক বলেন, “ভারত বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা চায়।” ইঙ্গিতে ভারত তাদের পাশে দাঁড়াবে বলেই জানান তিনি।
নয়াদিল্লিকে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিরা আশ্বাস দিয়েছেন, বাংলাদেশের ভূখণ্ডে ভারত-বিরোধী কার্যকলাপ চলতে দেওয়া হবে না। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকায় বিভিন্ন ইসলামপন্থী দল ও সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান ঠেকানো সম্ভব হয়েছে। তারা ক্ষমতায় না থাকলে পাকিস্তানের প্রভাব আবার বেড়ে যাবে, যা ভারতের নিরাপত্তার জন্য হুমকি। ভারতের মন্ত্রী ও রাজনৈতিক নেতারাও তা স্বীকার করেছেন বলে লীগ নেতারা জানিয়েছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশে প্রভাব বিস্তারে মরিয়া চিন ও পাকিস্তান। যে কোনও মূল্যে ঢাকাকে কবজা করে ভারতকে বেকায়দায় ফেলার ছক কষছে পড়শি দেশগুলি। এই প্রেক্ষাপটে চীনের কপালে চিন্তার ভাঁজ বাড়িয়ে সেপ্টেম্বরেই ভারতে আসছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের পরম্পরা হল নির্বাচনের আগে কেন্দ্র সরকার পদত্যাগ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্ব নেয়। তাদের অধীনেই নির্বাচন হয়। দুদিন আগে পাকিস্তানেও যেটা হয়েছে। কিন্তু হাসিনা সেই প্রথা ভেঙে নিজেই সরকারে থেকে গিয়ে সবরকম প্রভাব খাটিয়ে নির্বাচন করছে এবং বিরোধীরা বয়কট করলেও একতরফা ভোট করিয়ে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকছে বলে সে দেশের বিরোধীদের অভিযোগ। তাই তারা হাসিনার পদত্যাগ এবং কেয়ারটেকার সরকারের দাবিতে অনড় থেকে আপসহীন আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।
