মীযান ডেস্ক: ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার পাশাপাশি এবার লেবাননে প্রাণঘাতী হামলার দায়ে ইসরাইলকে ধিক্কার জানালেন জামাআতে ইসলামী হিন্দের সর্বভারতীয় সভাপতি সাইয়েদ সা’দাতুল্লাহ হোসায়েনি। হিজবুল্লাহ-কে অজুহাত হিসেবে খাড়া করে লেবাননে সাধারণ মানুষকে হত্যার দায়ে ইসরাইলকে তোপ দেগে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বেপরোয়াভাবে আক্রমণ চালাচ্ছে নেতানিয়াহুর বর্বর সরকার। একে সরাসরি ‘রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদ’ আখ্যা দিয়ে বুধবার এক প্রেস বিবৃতিতে আমীরে জামাআত বলেন, ফিলিস্তিনের মতোই লেবাননেও মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক সনদকে পদদলিত করে বেপরোয়াভাবে ধ্বংস ও হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে ইসরাইল।
উল্লেখ্য, পেজার, মোবাইল-সহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস ও গ্যাজেটে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এবং বোমা হামলা চালিয়ে ইতিমধ্যেই প্রায় ৪৫ শিশু-সহ প্রায় ৬৫০ লেবানিজকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে ইসরাইল। আহত হয়েছে আরও প্রায় হাজার দুয়েক। সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষকে জোর করে ঘরবাড়ি থেকে উৎখাত করা হচ্ছে। প্রাণে বাঁচার তাগিদে অন্তত ১০-১২ হাজার মানুষ ভিটেমাটি ছেড়ে অন্যত্র চলে গিয়েছে। উদ্বাস্তু হয়েছে ৫ লক্ষাধিক মানুষ। এভাবে লেবাননে চরম মানবিক সংকট তৈরি করে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনা ছড়ানোয় ইসরাইলকে কাঠগড়ায় তোলেন সাদাতুল্লাহ হোসায়েনি।
তাঁর অভিযোগ, হামাসকে অজুহাত করে যেমন ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় লাগাতার গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে, ঠিক সেভাবেই হিজবুল্লাহকে শিখণ্ডী করে এবার লেবাননকে ধ্বংসের ষড়যন্ত্র করেছে ইসরাইল। রাষ্ট্রসংঘের বার্ষিক অধিবেশন চলাকালে সবরকম আইন লংঘন করে ইসরাইল মধ্যপ্রাচ্যের দুটি দেশে একতরফা যুদ্ধ চালাচ্ছে। অথচ আন্তর্জাতিক মহল নীরব ও নির্বিকার।
হোসায়েনি আরও বলেন, ‘মাইন, বুবি-ট্র্যাপ এবং অন্যান্য ডিভাইসের প্রোটোকল’ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক কনভেনশনে সই করেও ইসরায়েল স্পষ্টভাবে এসব করে চলেছে। মধ্যপ্রাচ্যের এই অবৈধ দেশটি দেদার বুবি ট্র্যাপ বা ফাঁদ ব্যবহার করছে, যার পরিণাম ভয়াবহ। ইসরাইলের এমন পাশবিকতা ও ধ্বংসাত্মক আচরণকে নিঃসন্দেহে বিশ্বশান্তির জন্য মারাত্মক হুমকি বলে মন্তব্য করেন আমীরে জামাআত। এক্ষেত্রে ৯/১১ পরবর্তী পরিস্থিতির উল্লেখ করে তিনি বলেন, পশ্চিমারা সেই সময় সন্ত্রাস-বিরোধী যুদ্ধের সওদাগর হয়েছিল। অথচ আজ তারা ইসরাইলের রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের ব্যাপারে মুখে কুলুপ এঁটেছে।
তাঁর কথায়, পশ্চিমারা ইসরাইলকে সন্ত্রাসবাদী মানতে নারাজ। সন্ত্রাস বলতে তারা হামাস ও হিজবুল্লাহকেই মনে করে। এই দ্বিচারিতাই সন্ত্রাস নির্মূলের পথে অন্তরায় বলেন জামাআতে ইসলামী হিন্দের আমীর। অবশেষে গাজা উপত্যকায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং লেবাননে ইসরাইলি নৃশংসতা বন্ধে আন্তর্জাতিক মহলকে দ্রুত কার্যকপ পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, রাষ্ট্রসংঘ অবিলম্বে সদর্থক ভূমিকা না নিলে সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যে আবারও নতুন করে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়বে, যার পরিণতি হবে মারাত্মক ভয়াবহ। যা সারা বিশ্বকে নতুন ঝুঁকি ও হুমকির সামনে দাঁড় করাবে।