গাজা-যুদ্ধ নিয়ে ইজরায়েলি মন্ত্রিদের মধ্যে বিরোধ, বরখাস্ত বিদেশমন্ত্রী, টলমল নেতানিয়াহু সরকার

মীযান ডেস্ক: ইজরায়েলে নতুন রাজনৈতিক গোলযোগে চরম সঙ্কটে পড়েছেন প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। বিশেষ করে প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট এবং যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার সদস্য এবং তার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী বেনি গান্টজের সঙ্গে দ্বন্দ্বে নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক ক্যারিয়ার হুমকির মুখে পড়েছে। এরইমধ্যে বিদেশমন্ত্রী এলি কোহেনকে বরখাস্ত করতে বাধ্য হয়েছেন নেতানিয়াহু। ২০২৩ সালের একেবারে  শেষদিন ৩১ ডিসেম্বরে তাঁকে পদ থেকে অপসারিত করা হল। যা নিয়ে নতুন করে সরকারের মধ্যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ শুরুর সময় থেকেই একের পর এক সমস্যায় জড়াচ্ছেন নেতানিয়াহু। দেশের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে না পারা, গোয়েন্দা ব্যর্থতার জন্য তিনি অভ্যন্তরীণ চাপে ছিলেন। এর পর হামাসের হাত থেকে জিম্মীদের সকলকে মুক্ত করতে না পারা, ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের নির্বিচারে গণহত্যার জন্য আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি।

সব মিলিয়ে ৭৪ বছর বয়সী নেতানিয়াহু আরেক গভীর সঙ্কটে পড়েছেন। ফলে তিনি আর কতদিন ক্ষমতায় থাকতে পারবেন – তা নিয়ে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। গাজায় চলমান হামলা নিয়ে নেতানিয়াহু ও তার মন্ত্রিসভার সদস্যদের মধ্যে মতবিরোধ প্রতিনিয়ত বাড়ছে। উল্লেখ্য, তিন সদস্যবিশিষ্ট যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার সদস্যরা হলেন নেতানিয়াহু, গ্যালান্ট ও গান্টজ। বিরোধের কারণেই রবিবার রাতে যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে গ্যালান্ট ও গান্টজ অনুপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে বিরোধের মূল কারণ হল দক্ষিণ গাজায় ইজরায়েলি যুদ্ধের তীব্রতা এবং যুদ্ধের পর গাজার নিয়ন্ত্রণভার কার কাছে থাকবে।

সূত্রের খবর, নেতানিয়াহু আঁচ করতে পারছেন যে, গ্যালান্ট ও গান্টজ যুদ্ধের পর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার স্থলাভিষিক্ত হতে চাইছেন। এমনিতেই গ্যালান্ট, গান্টজ ও নেতানিয়াহুর মধ্যে বিরোধ বেশ পুরনো। গত মার্চেই আদালতের ডানা ছাঁটতে চেয়ে বিতর্কিত বিচার বিভাগীয় সংস্কারের বিরোধিতা করায় প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টকে বরখাস্ত করেছিলেন নেতানিয়াহু। ফলে নতুন করে গণবিক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সবচেয়ে বেশি সময় ধরে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকা প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এখন জনসমর্থনহীন হয়ে পড়েছেন। সমীক্ষা বলছে, ৭০ শতাংশ ইজরায়েলি এখন নেতানিয়াহুর পদত্যাগ চেয়ে লাগাতার প্রতিবাদ-বিক্ষোভ চালাচ্ছে। অন্যদিকে সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে নেতানিয়াহুর ছক বানচাল হয়ে গেছে। সব মিলিয়ে নেতানিয়াহুর গদি টলমল করছে। উল্লেখ্য, ইজরায়েলের দীর্ঘদিন ধরেই কোনও শক্তিশালী সরকার নেই। এক দেড় বছরের বেশি কোনও সরকার টিকছে না। গত ৫ বছরে ৬ বার নির্বাচন হয়েছে।

Stay Connected

Advt.

%d bloggers like this: