মীযান ডেস্ক: চন্দ্র অভিযানের পর এবার পাখির চোখ সূর্য। আজ ২ সেপ্টেম্বর শনিবার সকাল ১১টা ৫০ নাগাদ সূর্যে পাড়ি জমাবে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো-র কৃত্রিম উপগ্রহ। ২৩ আগস্ট চাঁদের দক্ষিণ মেরুর মাটি ছুঁয়েছে চন্দ্রযান-৩ এর ল্যান্ডার বিক্রম। অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটা থেকে পিএসএলভি-সি-৫৭ রকেটের মাধ্যমে রওনা দেবে এই উপগ্রহ। সূর্য সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করার লক্ষ্যে এই বিশেষ অভিযান। বহু প্রতীক্ষিত এই অভিযানের আগে ইসরো-র চেয়ারম্যান এস সোমনাথ বলেন, ‘অভিযান সংক্রান্ত শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি তুঙ্গে। রকেট আর উপগ্রহ দুই-ই তৈরি। অভিযানের আগে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষাও হয়ে গিয়েছে।’
ইসরো জানিয়েছে, সূর্যের কর্মকাণ্ড এবং মহাকাশের আবহাওয়ার উপর তার প্রভাব বিশ্লেষণ করে দেখবে আদিত্য এল-১। তবে সরাসরি সূর্যের কাছে নয়। এই মহাকাশযানকে একটি কৌশলগত কক্ষপথে পাঠানো হবে। নাম ল্যাগরেঞ্জ পয়েন্ট এল-১। পৃথিবী থেকে যার দূরত্ব ১৫ লক্ষ কিলোমিটার। সেখানে পৌঁছতে সময় লাগবে ১২৫ দিন। জানা গিয়েছে, এল-১ পয়েন্টের চারপাশে একটি ‘হ্যালো’ কক্ষপথে অবস্থান করবে এই উপগ্রহ। এর জেরে সেটির উপর কোনওরকম গ্রহণ বা মহাজাগতিক ঘটনার প্রভাব পড়বে না। সবসময় সূর্যের উপর নজর রাখতে পারবে আদিত্য এল-১।
গবেষণাধর্মী এই কৃত্রিম উপগ্রহে থাকবে সাতটি পেলোড। যার মধ্যে অন্যতম ভিসিবল এমিশন লাইন করোনাগ্রাফ (ভিইএলসি)। জানা গিয়েছে, উপগ্রহ নির্দিষ্ট কক্ষপথে পৌঁছতেই দিনে সূর্য সংক্রান্ত ১ হাজার ৪৪০টি ছবি পাঠাবে এই বিশাল পেলোড। ইসরোর সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এই পেলোড তৈরি করেছে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব অ্যাস্ট্রফিজিক্স (আইআইএ)। বিশালাকার এই পেলোডে থাকছে একটি বিশেষ সফ্টওয়্যার।
সূত্রের খবর, ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ থেকেই ছবি পাঠাতে শুরু করবে ভিইএলসি। এবিষয় অধ্যাপক জগদেব সিং বলেন, ‘ সব ঠিকঠাক থাকলে জানুয়ারির মাঝামাঝি নির্দিষ্ট কক্ষপথে পৌঁছে যাবে এই উপগ্রহ। প্রথমে অন্যান্য ছোট যন্ত্রাংশগুলিকে খতিয়ে দেখতে হবে। ফেব্রুয়ারির শেষে খোলা হবে ভিইএলসির শাটার। ওই মাসের শেষ থেকেই মিলবে তথ্য।’
এদিকে, রাশিয়ার চন্দ্রযান লুনা-২৫ যেখানে আছড়ে পড়েছিল, সেই স্থানের ছবি প্রকাশ করেছে নাসা। নাসার দাবি, ওই ঘটনায় চন্দ্রপৃষ্ঠে ১০ মিটার গভীর একটি গর্ত তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যেই এই সংক্রান্ত একাধিক ছবি প্রকাশ্যে এনেছে নাসার মহাকাশযান। এক বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, ‘নতুন গর্তটির ব্যস ১০ মিটার। লুনা ২৫-এর সংঘর্ষস্থলের কাছেই সেটি তৈরি হয়েছে। সুতরাং প্রাকৃতিক কারণে নয়, ওই মহাকাশযানের জেরেই তৈরি হয়েছে গর্তটি।’