হামাসকে নিশ্চিহ্ন করতে সামরিক জোট গঠন জরুরি, নেতানিয়াহুকে প্রস্তাব ফরাসি প্রেসিডেন্টের

মীযান ডেস্ক:  সম্প্রতি নাইজার ও গ্যাবনের মতো আফ্রিকার দেশগুলোতে নৈতিকভাবে পরাজিত হয়ে, তাদের সামরিক জান্তা সরকারের কাছে কার্যত মাথানত করতে হয়েছে ফ্রান্সকে। পরোক্ষে এই পরাজয়ের গ্লানি থেকে ভিতরে ভিতরে ফুঁসছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্র। সেই গাত্রদাহ থেকেই গাজাবাসীর ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার কথা ভাবছেন। তাই ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে আন্তর্জাতিক স্তরে সামরিক জোট গঠনের প্রস্তাব দিলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইসরায়েল একা নয়। আমরাও পাশে থাকছি।

বুধবার ইজরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে সমর্থন জানাতে তেল আবিব গিয়ে বৈঠক করেন এবং ইজরায়েলকে সামরিক সহায়তা বা হামাসের বিরুদ্ধে সামরিক জোট গড়ার প্রস্তাব দেন ম্যাক্রন। তিনি বলেন, সন্ত্রাসবাদ ইসরায়েল ও ফ্রান্স দুই দেশেরই শত্রু। আইএসের বিরুদ্ধে যেমন আমরা সামরিক জোট গড়ে লড়াই করেছিলাম। ইরাক ও সিরিয়াতে আইএসের বিরুদ্ধে ফ্রান্স লড়াই করছে, হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতেও প্রস্তুত আমরা।’

উল্লেখ্য, হামাসের প্রতিরোধী হামলায় গত ১৯ দিনে ৩০ জন ফরাসি নাগরিক নিহত হয়েছেন। এই যুদ্ধের শুরু থেকেই ইজরায়েলকে সমর্থন জানিয়ে আসছে ফ্রান্স। কদিন আগে নেতানিয়াহুকে সাহায্য ও সমর্থন জানাতে ইজরায়েল সফরে যান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক।

বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, গাজাকে কেন্দ্র করে এবার হয়ত নতুন যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়তে পারে মধ্যপ্রাচ্য ও পশ্চিম এশিয়ায়। কারণ, আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্সের মতো পরাশক্তি যু্দ্ধবাজরা ইজরায়েলের পাশে দাঁড়িয়েছে। তারা কেউ কিন্তু ফিলিস্তিনকে সমবেদনা জানায়নি, সুতরাং সমর্থন করার প্রশ্নই ওঠে না। বাকি দুই শক্তিশালী দেশের মধ্যে রাশিয়া তো ইউক্রেন যু্দ্ধ নিয়ে ব্যস্ত। তবে রাশিয়া ও চীন বলেছে, তারা ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার পক্ষে এবং এটাই মধ্যপ্রাচ্য সংকট নিরসনে স্থায়ী সমাধান সূত্র। এর বিকল্প কিছু হতে পারে না। কিন্তু কেউই গাজা বা ফিলিস্তিনকে যুদ্ধের জন্য সাহায্য বা সমর্থনের কথা ঘোষণা করেনি। তুরস্ক, ইরান, সৌদি আরূ, কাতারের মতো দেশগুলোও একরকম মধ্যপন্থা অবলম্বন করছে।

এদিকে কেউ কেউ বলছেন, মাছ যেমন জল ছাড়া বাঁচতে পারে না, তেমনি পশ্চিমারাও যুদ্ধ ছাড়া বেশিদিন স্থির থাকতে পারে না। যুদ্ধই হল তাদের জিয়নকাঠি। কারণ, তাদের মূল টার্গেট হল মুসলিম এবং ইসলাম। ৯০ এর দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর ঔপনিবেশিক তথা সাম্রাজ্যবাদীরা ইসলামকেই সবথেকে বড় হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এজন্য তারা ইসলামোফোবিয়াকে অজুহাত হিসেবে খাড়া করেছে। তাই হামাসকে তারা জঙ্গি তকমা দিয়েছে এবং হামাসের স্বাধীনতা সংগ্রামকে সন্ত্রাসবাদী হামলা বলে দাগিয়ে দিয়েছে। ফলে যুদ্ধটা সহজ হবে এবং গ্রহণযোগ্যতা পাবে। সর্বোপরি যুদ্ধ না হলে এদের অস্ত্র ব্যবসা লাটে উঠে যাবে। তাই যে কোন অজুহাতে অথবা ছলে বলে কৌশলে যুদ্ধরে জিগির তুলতে অতিসক্রিয় হয়ে উঠেছে পশ্চিমারা।

Stay Connected

Advt.

%d bloggers like this: