মীযান ডেস্ক: ”নৈতিকতাই স্বাধীনতার ভিত্তি” শিরোনামে রবিবার ২৯ সেপ্টেম্বর মুর্শিদাবাদের বেলডাঙ্গায় এক সুধী সমাবেশের আয়োজন করে জামাআতে ইসলামী হিন্দ এর বড়ঞা ব্লক। জেলার বিভাগীয় সম্পাদক আমিরুল বাশার তাঁর বক্তব্যে বলেন, স্বাধীনতা ও নৈতিকতা প্রত্যেক মানুষের জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। নৈতিকতা বিবর্জিত স্বাধীনতা কখনোই মানব সমাজকে তার কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে পারে না। স্বাধীনতা মানুষের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক জীবনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ঠিকই; কিন্তু অবাধ স্বাধীনতা এইসব ক্ষেত্রগুলিতে বিপর্যয় ডেকে এনেছে। তাই মানুষের বিবেককে জাগ্রত করতে এবং মানুষের নৈতিক জাগরণ ঘটাতে “নৈতিকতাই স্বাধীনতার ভিত্তি” শিরোনামে দেশজুড়ে ক্যাম্পেইন পরিচালনা করে চলেছে জামাআতে ইসলামী হিন্দ।
মাওলানা আব্দুল্লাহ সাহেব বলেন, আজ আমাদের সমাজে নৈতিকতা প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে। যার কারণে আমরা সমাজে প্রতিনিয়ত দেখতে পাচ্ছি ধর্ষণ, খুন, রাহাজানি এবং জুলুম ও অন্যায়ের বাড়বাড়ন্ত। এসব রোধে মানুষকে সচেতন করতে জামাআতে ইসলামী হিন্দের চলমান প্রচারাভিযানের ভূয়সী প্রশংসা করে তিনি জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকল শ্রেণির মানুষকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।
জামাআতে ইসলামীর বেলডাঙ্গার সভাপতি সেলিম রেজা বলেন, স্বাধীনতার ৭৮ বছর পরেও দেশে ব্যক্তি স্বাধীনতা ও অধিকার এতটা খারাপ জায়গায় বিরাজমান যে, প্রতি ১৬ মিনিটে আমাদের দেশে একজন নারী ধর্ষিতা হন। সম্প্রতি আরজি কর হাসপাতালে জুনিয়র ডাক্তারকে ধর্ষণ ও হত্যা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এনসিআরবি-র রিপোর্ট অনুযায়ী প্রতিদিন এ দেশে গড়ে ৯০ জনেরও বেশি মহিলা ধর্ষিতা হন। আইন করে এসব প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। ১২ বছর আগে দিল্লিতে নির্ভয়া ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডে দেশ উত্তাল হয়েছিল। কিন্তু তার একযুগ পর আজও দেশে ধর্ষণ কমেনি; বরং বেড়েই চলেছে। এর অন্যতম কারণ মদ, ড্রাগস, সাট্টা, লটারি, জুয়া, পর্নোগ্রাফি, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক, অবাধ যৌনাচার, সমকামিতা, বহুগামিতা। তাই খুন, ধর্ষণ থেকে শুরু করে যাবতীয় অনাচার, পাপাচার, ব্যাভিচার বন্ধ করতে হলে এর নেপথ্য কারণগুলোকে নিষিদ্ধ করতে হবে।
বড়ঞা ব্লকের সভাপতি হাবিবর মির্জা বলেন, নৈতিক মূল্যবোধ মেনে চলার মাধ্যমেই প্রকৃত স্বাধীনতা অর্জন সম্ভব। জামাআতে ইসলামী হিন্দের উদ্যোগে দেশজুড়ে সেপ্টেম্বর মাসব্যাপী চলমান ক্যাম্পেইনের লক্ষ্যই হল জাতি, ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ, ধর্ম বা অঞ্চল নির্বিশেষে প্রত্যেকের জন্য যথাযথ মৌলিক অধিকার ও মৌলিক চাহিদা পূরণে প্রয়োজনীয় স্বাধীনতা ও ব্যবস্থাপনা সুনিশ্চিত করা। আজকের এই সুধী সমাবেশে ব্লকের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রায় একশো জন অংশগ্রহণ করেন। এই সমাবেশ আগামী দিনে আমাদেরকে নৈতিকতাসম্পন্ন সমাজ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করতে স্পৃহা জোগাবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।