খারিজি মাদ্রাসাগুলোকে নথিভুক্ত করার সুযোগ দেবে রাজ্য সরকার

মীযান ডেস্ক: খারিজি মাদ্রাসাগুলোকে সরকারি নথিভুক্ত করতে উদ্যোগী হল রাজ্য সরকার। এই মর্মে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী বলেছেন, স্কুল পড়ুয়াদের জন্য বিভিন্ন রকম সরকারি প্রকল্পের সুবিধাগুলো খারিজি মাদ্রাসার পড়ুয়ারাও যাতে পায়, সেই লক্ষ্যে এই নথিভুক্তিকরণ বা রেজিস্ট্রেশন দেওয়া হবে। তবে পুরো বিষয়টি মাদ্রাসাগুলোর ওপর ছেড়ে দেওয়া হবে। এটা তাদের স্বাধীনতা। তারা নথিভুক্ত করতেও পারে, আবার নাও পারে। তিনি একথাও বলেছেন যে, নথিভুক্ত করার পর খারিজি মাদ্রাসাগুলোর সিলেবাস কিংবা পঠনপাঠনে সরকার কোনও রকম হস্তক্ষেপ করবে না বা নাক গলাবে না।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার নবান্নে জানিয়েছেন, এজন্য রাজ্য স্তরে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গড়া হবে। এই কমিটিতে সরকারি আধিকারিকের সঙ্গেই থাকবেন শিক্ষাবিদ এবং মুসলিম সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। এই মাদ্রাসাগুলির প্রয়োজনীয়তা ওই কমিটিই খতিয়ে দেখবে।

নথিভুক্ত হলে খারিজি মাদ্রাসার পড়ুয়ারা কন্যাশ্রী, সবুজসাথী, ঐক্যশ্রী প্রভৃতি প্রকল্পের সুবিধা পাবে। এসব প্রকল্পের সুযোগ খারিজি মাদ্রাসার পড়ুয়ারা এখন পায় না। নথিভুক্তির পরও মাদ্রাসাগুলির পঠনপাঠন নিয়ে সরকার কোনওরকম হস্তক্ষেপ করবে না বলে স্পষ্ট করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রসঙ্গত, রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বহু খারিজি মাদ্রাসা রয়েছে। সেখানে ধর্মীয় বা আধ্যাত্মিক শিক্ষা দেওয়া হয়। এই মাদ্রাসাগুলি নিজ উদ্যোগে অর্থ সংগ্রহ করে শিক্ষকদের যৎসামান্য সাম্মানিক দেয় এবং প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য খরচ চালায়।

কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, কেবলমাত্র মুসলিম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকেই কেন সরকারি নথিভুক্তির প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে। কেনই বা হিন্দু টোল বা আরএসএস পরিচালিত স্কুলগুলোকে এক্ষেত্রে বাদ রাখা হচ্ছে। তাহলে কি এর মধ্যে রাজ্য সরকারের অন্য কোনও অভিসন্ধি আছে। কারও কারও মতে, বামফ্রন্ট সরকার যেমন মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন চালু করে অমুসলিম শিক্ষক নিয়োগের পথ প্রশস্ত করে মাদ্রাসার ঐতিহ্য ও পঠনপাঠন ব্যবস্থা লাটে তুলে দিয়ে গেছে, সেভাবেই কি এবার খারিজি মাদ্রাসার নথিভুক্ত করার মাধ্যমে এসব প্রতিষ্ঠানের সিলেবাস এবং পঠনপাঠন প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করা হতে পারে – এমনই নানা রকম সন্দেহ, সংশয় প্রকাশ করছেন অনেকে।

Stay Connected

Advt.

%d bloggers like this: