মীযান ডেস্ক: দেখতে দেখতে মণিপুরে সহিংসতা ও জাতিদাঙ্গা তিন মাস হয়ে গেল। এখনও অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছে না সেখানকার বিজেপি জোট সরকার। এমতাবস্থায় মণিপুর রাজ্য সরকারের ওপর থেকে সমর্থন তুলে নিল এনডিএ-র শরিদ দল কুকি পিপলস অ্যালায়েন্স। এই দল থেকে দু’জন বিধায়ক রয়েছেন মণিপুরের সরকারে। ফলে হিংসা বিধ্বস্ত মণিপুরে বড়সড় ধাক্কা খেল বিজেপি জোট সরকার ও তাদের মুখ্যমন্ত্রী এন বিরেন সিং। রাজ্যপালের কাছে চিঠি দিয়ে সমর্থন প্রত্যাহারের কথা জানিয়েছেন দলের সভাপতি তংম্যাং হাওকিপ। তাঁর মতে, এক সুতোয় দুলছে সরকার। যে কোনও মুহূর্তে পড়ে যাবে বীরেন সিংয়ের বিজেপি জোট সরকার।
প্রায় তিনমাস ধরে জাতি সংঘর্ষের আগুনে জ্বলছে গোটা মণিপুর। প্রতিদিনই বাড়ছে মৃত্যুমিছিল। একে অপরের উপর হামলা চালাচ্ছে রাজ্যের দুই জাতি-কুকি ও মেইতেই। উল্লেখ্য, কুকিরা হল খ্রিস্টান এবং মেইতেইরা হিন্দু। এহেন পরিস্থিতিতে একাধিকবার প্রশ্নের মুখে পড়েছে মুখ্যমন্ত্রী বিরেন সিংয়ের ভূমিকা। চাপের মুখে পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েও একেবারে শেষ মুহূর্তে তা প্রত্যাহার করেন তিনি। সেদিন তিনি সাফাই দিয়ে বলেছিলেন, পদত্যাগ করতে রাজভবনে যাবার তাঁর অনুরাগীরা রাস্তা আটকে দিলে তিনি রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে না পেরে ফিরে আসেন। তাই নাকি তাঁর পদত্যাগ করা হয়নি। যাহোক, এবার এক শরিক দল সমর্থন প্রত্যাহার করায় বিরাট চাপের মুখে পড়লেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী।
রবিবারই মণিপুরের রাজ্যপাল অনুসূয়া উইকের কাছে চিঠি দেয় কুকি পিপলস অ্যালায়েন্স পার্টি। দলটির সভাপতি তংম্যাং হাওকিপ সাফ জানিয়ে দেন, বীরেন সিংয়ের সরকার থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নিচ্ছে তাঁদের দল। চিঠিতে লেখা হয়েছে, “বর্তমান পরিস্থিতি খুব গভীরভাবে খতিয়ে দেখেছি। আমাদের ধারণা, বীরেন সিংয়ের সরকারকে সমর্থন করে আর কোনও ফল হবে না, সমস্যা নিরসনে তিনি ব্যর্থ। তাই সুরাহার কোনও আশা নেই।”
মণিপুর বিধানসভায় বিজেপির ৩২ জন সদস্য রয়েছে। ৫ জন এনপিএফ এবং তিনজন নির্দল বিধায়কের সমর্থন রয়েছে৷ বিরোধী শিবিরের বিধায়কদের মধ্যে এনপিপির ৭, কংগ্রেসের ৫ এবং জেডিইউ এর ৬ বিধায়ক আছেন। ২০২২ এর মার্চে বীরেন সিংয়ের সরকার গঠনের সময় টিএমসি-র এক বিধায়কও সমর্থন দিয়েছিল। উল্লেখ্য, গত ৩ মে থেকে মণিপুরে জাতিগত সংঘর্ষ শুরু হয়ে। এই ছোট্ট পাহাড়ি রাজ্যে ৫৩ শতাংশ মেইতেই এবং ৪৩ শতাংশ কুকি জনগোষ্ঠী।