পিঠোপিঠি এনডিএ ও ইন্ডিয়ার বৈঠক: আজ সন্ধ্যার পর পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেবে? নজরে এন ফ্যাক্টর

মীযান ডেস্ক: বিজেপি-এনডিএ কিংবা কংগ্রেস-ইন্ডিয়া কোনপক্ষই নিরঙ্কুশ গরীষ্ঠতা পেল না। অর্থাৎ অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনে ত্রিশঙ্কু ফলাফল হয়েছে। তবে এই ভোটে যে জনাদেশ পাওয়া গেছে, তাতে স্পষ্ট যে, হেরে গেছে নফরত বা ঘৃণা বিদ্বেষ। প্রত্যাখ্যাত হয়েছে ধর্মের রাজনীতি। আর পরাস্ত হয়েছে বিদ্বেষ-বিভাজন। একইসঙ্গে জিতেছে ভাইচারা, ধর্মনিরপেক্ষতা। আর সবথেকে বড় নৈতিক পরাজয় হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হিন্দুত্বের রাজনীতি। সংখ্যার দম্ভে শরিকদের হেয় করা, পাত্তা না দেওয়া এবং বিরোধীদের নিত্যদিন হেনস্তা বা হয়রান করা বিজেপির একক সংখ্যাগরিষ্ঠতাই থাকল না লোকসভায়।

আব কী বার ২৪০ পার এর স্লোগান ভোতা করে দিয়ে বিজেপিকে ২৪০ আসনে বেঁধে ফেলল জনগণ। অগত্যা দুই শরিক নীতীশ কুমার এবং চন্দ্রবাবু নাইডুকে এখন খুব তেল দিচ্ছেন মোদি। যাতে তারা বিগড়ে না যায় কিংবা ইন্ডিয়া জোটে শামিল না হয়ে যায়। তাহলে বিরোধী জোটই সরকার গড়ে ফেলবে। উল্লেখ্য, মাত্র কয়েক মাস আগে চন্দ্রবাবু নাইডুকে জেল খাটিয়ে নিজেদের দিকে টেনেছিল বিজেপি। সেই আতঙ্ক এখনও তাড়া করে ফিরছে নাইডুকে। তাঁর দল টিডিপি অন্ধ্রপ্রদেশ বিধানসভায় খুব ভাল রেজাল্ট করেছে। নাইডু এই নিয়ে চতুর্থ বার মুখ্যমন্ত্রী হতে চলেছেন।

এমতাবস্থায় তিনি জল মাপছেন। যদিও আজ বিকেল ৪টায় এনডিএ জোটের বৈঠকে তিনি হাজির হয়েছেন। আবার সন্ধ্যা ৬ টায় ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকে থাকারও ইঙ্গিত দিয়েছেন। অন্যদিকে নীতীশ কুমার এবং তেজস্বী যাদব একই বিমানে আজ দিল্লি এসেছেন। তাঁরাও পক্ষ বিপক্ষের বৈঠকে থাকবেন বলে জানা গিয়েছে। তবে তেজস্বী ইন্ডিয়া জোটে থাকছেন, এ নিয়ে কোনও সংশয় নেই। কারণ, তেজস্বীর বাবা লালু প্রসাদ যাদব দেশের একমাত্র জননেতা, যিনি সবথেকে কট্টর বিজেপি বিরোধী। ভিপি সিং সরকারের সময়কে বাদ দিলে লালু আর কখনও বিজেপির সঙ্গে যাননি। তবে নীতীশ কী করবেন, তা খোলসা করেননি। তাঁকে নিয়ে সংশয়ও আছে। কারণ, তিনি ছিলেন ইন্ডিয়া জোটের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। কিন্তু সামান্য কারণে তিনি মাঝপথে বিজেপির শিবিরে ভিড়ে যান। এর আগেও একাধিকবার তিনি এ-ডাল ও-ডাল করেছেন।

ভোটের সামগ্রিক ফলাফলে এনডিএ পেয়েছে ২৯২ আসন। অর্থাৎ বিজেপির শরিকরা পেয়েছে ৫২ আসন। ২৭২ ম্যাজিক ফিগারের থেকে সামান্য বেশি। কিন্তু নীতীশ এবং নাইডু যদি অন্য কিছু করে বসেন, তাহলে মোদির বাড়া ভাতে ছাই পড়ে যাবে। এবং সেটা বোঝা যাবে আর দু-তিন ঘণ্টার মধ্যেই। কারণ, নাইডুর দল জিতেছে ১৬ এবং নীতিশের ঝুলিতে গিয়েছে ১২টি আসন। এই ২৮ আসন মাইনাস হলে মোদি সরকার গড়তে পারবেন না। তাই নীতীশ ও নাইডুর দিকেই এখন পাখির চোখ। এই দুজনকেই কিং মেকার ভাবা হচ্ছে। এই এন ফ্যাক্টরই সব হিসেব নিকেশ ওলোট পালোট করে দিতে পারে।

Stay Connected

Advt.

%d bloggers like this: