বিপাকে পাকিস্তান: সর্বোচ্চ আসন পেয়েও পিছিয়ে পিটিআই, ইমরানের দল ভাঙিয়ে আয়ারাম-গায়ারাম সরকার গড়তে মরিয়া নওয়াজ শরিফ

মীযান ডেস্ক: দেখতে দেখতে ছয় দিন হয়ে গেল পাকিস্তানে নির্বাচন হয়েছে। এর মধ্যে ভোট গণনা এবং ফলাফল প্রকাশ করতেই ৪-৫দিন লেগে গেছে। বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, ভোটের ফল উলটে পালটে দিতে এতখানি সময় লাগছে। যাহোক, শেষমেষ ঘোষিত ফলাফলে দেখা যাচ্ছে শাহবাজ শরিফ সরকার অনেক চেষ্টা করেও শেষমেষ ইমরান খানের শিবিরকে আটকাতে পারেনি। সবথেকে বেশি আসন (১০১) পেয়েছে ইমরান ও তাঁর হাতে তৈরি দল তেহরিক এ ইনসাফ দলের প্রার্থীরা। যদিও শরিফ সরকার ইমরানের পিটিআই দলের ওপর পাবন্দি লাগানোয় সরাসরি কেউ দল থেকে প্রার্থী হতে পারেনি। ইমরান অনুগামীরা সকলেই এবার নির্দল হিসেবে প্রার্থী হয়েছিলেন এবং তারা ক্ষমতাসীন নওয়াজ শরিফ এর দল পিএমএল (এন) এবং বিলাওয়াল ভুট্টো-আসিফ জারদারির দল পিপিপি-র থেকে বেশি আসনে জিতেছে পিটিআই এর নির্দল প্রার্থীরা।

পাকিস্তানের জাতীয় সংসদে মোট ৩৩৬টি আসন রয়েছে। এর মধ্যে ২৬৬টিতে সরাসরি নির্বাচন হয়। একজন প্রার্থী মারা যাওয়ায় ৮ ফেব্রুয়ারি ২৬৫ আসনে ভোট হয়েছে। সংরক্ষিত আসন ৭০টি। এই ৭০টা আসন বিজয়ী দলগুলির মধ্যে হিসাব মতো ভাগ করে দেওয়া হয়। ৭৫ আসনে জিতে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে নওয়াজ শরিফের পিএমএল-এন। বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির পাকিস্তান পিপলস পার্টি পেয়েছে ৫৪টি আসন। সরকার গঠনে ম্যাজিক ফিগার ১৩৪ আসন। এমতাবস্থায় শরিফ ও ভুট্টো পরিবার জোট করলে হয় ১২৯। তারপরেও সরকার গড়তে ৫টি আসন হওয়ায় ইমরানপন্থী নির্দল সাংসদকের চড়া দামে ও বড় পদের লোভ দেখিয়ে পকেটে পুরে নিচ্ছে শরিফরা।

কিন্তু তাতেও সুরাহ হয়নি। প্রধানমন্ত্রী কে হবেন? সর্বোচ্চ পদের জন্য মরিয়া উভয় দলই। বিলাওয়াল প্রধানমন্ত্রী পদ ছাড়তে নারাজ। শরিফ শিবির বেনজির ভুট্টোর ছেলে বিলাওয়ালকে রাষ্ট্রপতি বানানোর প্রস্তাব দিলে রাজি হননি ৩৫ বছর বয়সি বিলাওয়াল। গতবার শাহবাজ শরিফ সরকারে বিদেশমন্ত্রী ছিলেন বিলাওয়াল। তবে যাই হোক, আপাতত ইমরানের নির্দল সাংসদদের কয়েকজনকে কিনে সরকার গড়ার পথ প্রশস্ত করে ফেলেছে শরিফরা। সংখ্যার নিরিখে এখন কেবল জোট সরকারের শপথ নেওয়ার অপেক্ষা মাত্র। তবুও যতক্ষণ না বিলাওয়াল পাক্কা সিদ্ধান্ত ঘোষণা করছেন, ততক্ষণ নতুন সরকার গঠন নিয়ে বিপাকেই থাকছে পাকিস্তান।

সর্বশেষ খবরে জানা গিয়েছে, মিলিজুলি সরকার গড়তে এখন জোরকদমে চলছে দর কষাকষি। ‌‌‌‌‌‌‌শোনা যাচ্ছে পিপিপি এবং পিএমএল-এন আড়াই বছর করে ক্ষমতা ভাগাভাগি নিয়েও রুদ্ধদ্বার ও ম্যারাথন বৈঠক চালাচ্ছে।

অন্যদিকে ফলাফল থেকে যা উঠে এসেছে, তা হল লাহোরে নিজেদের ক্ষমতা বজায় রেখেছে শরিফ পরিবার। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ, ভাই শাহবাজ, কন্যা মারিয়ামও জিতেছেন। তবে নওয়াজ দুটো আসনে পরার্থী হয়ে একটিতে হেরেছেন। জয় পেয়েছেন বিলাবল ভুট্টো, পিটিআই চেয়ারম্যান গহর আলি খান।

আবার ইমরান খানের দল বা পিটিআই নেতা গওহর খান সাফ জানিয়েছেন, শত্রুদের সঙ্গে কোনওভাবেই সমঝোতা নয়। সরকার গঠনে কোনও দলের সঙ্গে হাত মেলাতে নারাজ তারা। বদলে তাঁরা বসবেন বিরোধী আসনে।

Stay Connected

Advt.

%d bloggers like this: