চাল, ডাল, আটা, দুধ, চিনির দাম বেড়েছে ২০ শতাংশ, পিঁয়াজের ঝাঁঝে হেঁশেলে আগুন

মীযান ডেস্ক: খোদ কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রকের রিপোর্টেই স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে, গত এক বছরে চাল, ডাল, গম-আটা, চিনি, দুধ থেকে থেকে শাক-সব্জি সব কিছুরই দাম অনেকটা বেড়েছে। সব মিলিয়ে বৃদ্ধির হার সর্বোচ্চ ৩৭ শতাংশ পর্যন্ত। এই সময়ে সবথেকে বেশি দাম বেড়েছে ছোলা, অড়হর, বিউলি ও মুগ ডালের। এসব ডালের ক্ষেত্রে মূল্য বৃদ্ধির হার ১১.৮৭ থেকে ৩৭.৪২ শতাংশ। চিনির দামও বেড়েছে ৬.৪৯ শতাংশ। একমাত্র দাম কমেছে ভোজ্য তেলের। তাও আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমার জের বলেই মনে করছে ব্যবসায়ী মহল। কারণ, দেশের ভোজ্য তেলের চাহিদার অর্ধেকের বেশি পূরণ হয় বিদেশ থেকে আমদানি করে।

এমতাবস্থায় ভোটের কথা মাথায় রেখে আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীর দাম কমাতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে কেন্দ্র সরকারকে। একগুচ্ছ পদক্ষেপ ইতিমধ্যেই নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছে কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রক। কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি সম্পূর্ণ আলাদা।

সম্প্রতি কৃষিপণ্য সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রক কমিটির বিশেষ বৈঠকের এজেন্ডা পেপারে বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রীর মূল্যের হ্রাস-বৃদ্ধির খতিয়ান দিয়েছে খাদ্যমন্ত্রক। ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত সেই হিসেবে দেখা যাচ্ছে, গত এক বছরে খুচরো বাজারে চালের দর বৃদ্ধি হয়েছে ১২.৫৩ শতাংশ। ২০২২ সালের ১৪ নভেম্বর চালের গড় দাম ছিল ৩৮ টাকা ১৫ পয়সা। সেটা এখন বেড়ে হয়েছে ৪২ টাকা ৯৩ পয়সা। একই সময়ে আটা ও গমের খুচরো দাম বেড়েছে যথাক্রমে ৫.২৩ শতাংশ ও ২.৫৪ শতাংশ। চাল ও আটার দাম কমাতে গত এক বছর ধরে চেষ্টা করেও ব্যর্থ মোদি সরকার।

গম রপ্তানি আগেই বন্ধ করা হয়েছিল। পরে বাসমতী ছাড়া অন্য সব ধরনের চালের ক্ষেত্রেও কার্যকর হয় একই সিদ্ধান্ত। তার উপর গত মার্চ থেকে নিজস্ব মজুত থেকে প্রচুর পরিমাণে গম খোলা বাজারে বিক্রি করেছে কেন্দ্র। তা সত্ত্বেও দাম কমা তো দূরের কথা, উল্টে বেড়ে গিয়েছে। তাই লোকসভা ভোটের মুখে পরিস্থিতি সামাল দিতে কেন্দ্রীয় সরকার খুচরো বাজারে ২৭ টাকা কেজি দরে ‘ভারত আটা’ বিক্রি করতে নামছে। তারপরও অবশ্য সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, খুচরো বাজারে আটার দাম ৩৬ টাকা ২০ পয়সাতেই দাঁড়িয়ে।

এই পর্বে সবথেকে বেশি দাম বেড়েছে অড়হর ডালের। এক বছর আগে দাম ছিল ১১৩ টাকা ২৭ পয়সা প্রতি কেজি। এখন তা বেড়ে হয়েছে ১৫৫ টাকা ৬৬ পয়সা। খাদ্যমন্ত্রকের দাবি, এই এক বছরে দাম কমেছে শুধু মসুর ডালের। ২০২২ সালের ১৪ নভেম্বর যা ছিল কেজি প্রতি ৯৬ টাকা ৪৩ পয়সা। সেটা এখন ৯৪ টাকা ১৩ পয়সা। যদিও খোলা বাজারে মুসুর ডালের দাম ১২০ টাকা। দুধেরও মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় একই হারে। সব্জির মধ্যে পেঁয়াজের দাম এক বছরে বেড়েছে ৩১.৬৩ শতাংশ। কলকাতায় ২০২২ সালের নভেম্বরে পেঁয়াজ ছিল ৩২ টাকা। সেই দাম বেড়ে এখন দ্বিগুণেরও বেশি।

Stay Connected

Advt.

%d bloggers like this: