মীযান ডেস্ক: গত বছর ১৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর লালকেল্লায় ভাষণের কয়েক ঘণ্টা পরেই বিলকিস বানোর ধর্ষমদের মুক্তি দেওয়া হয়। গণধর্ষণ ও গণহত্যায় দোষী সাব্যস্ত ১১জন কুখ্যাত অপরাধীকে এভাবে স্বাধীনতা দিবসের দিনেই জামিন দেওয়াকে নিয়ে দেশ তোলপাড় হয়েছিল। বিবেকের কাঠগড়ায় গুজরাট সরকারকে তুলোধনা করেছিল দেশের সুশীল সমাজ, নারী অধিকার ও মানবাধিকার সংগঠনগুলি। কিন্তু কারও কথায় কর্ণপাত না করে, চাপের মুখেও নিজেদের সিদ্ধান্তে অনড় ছিল গুজরাত সরকার। এই সিদ্ধান্ত সঠিক না বেঠিক, নারীর অধিকার রক্ষার পক্ষে তা কতটা বিপজ্জনক, কী দৃষ্টান্ত প্রতিষ্ঠিত হল, দেশ তথা বিশ্বকে কী বার্তা দেওয়া হল– এসব বিষয় নিয়ে তর্ক-বিতর্ক, আলোচনা এখনও চলছে। এবার এই বিষয়ে এক মামলায় সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিল, গণ বিক্ষোভে বিচার বিভাগীয় সিদ্ধান্ত প্রভাবিত হবে না।
বিলকিস বানোর আইনজীবী শোভা গুপ্তা সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছিলেন, দোষীদের মুক্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে জনবিক্ষোভের মতো একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টরকেও বিচার করা উচিত। তিনি দাবি করেন, বিলকিস বানোর ধর্ষকদের মুক্তির পর দেশজুড়ে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ হয়েছে। তাঁর এই বক্তব্যের জবাবে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, গণ বিক্ষোভ বিচার বিভাগকে প্রভাবিত করে না। আমরা কেবল আইনি প্রক্রিয়াকেই দেখব, বিক্ষোভ-প্রতিবাদ দেখে এগোব না। ধরা যাক, কোনও বিক্ষোভ হল না। সেক্ষেত্রে আমরা কি নির্দেশ বহাল রেখে দেব? গণ বিক্ষোভ মানেই কি সিদ্ধান্ত ভুল ছিল?”
উল্লেখ্য, ২০০২ সালে গোধরা হিংসার সময়ে অন্ত্বসত্ত্বা বিলকিসকে গণধর্ষণ ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের গণহত্যার অভিযোগে ১১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। কিন্তু ২০২২ সালের ১৫ আগস্ট গুজরাট সরকারের নির্দেশে সেইসব ধর্ষক ও খুনিদের মুক্তি দেওয়া হয়। তাদেরকে ফুল, মালা দিয়ে, মিস্টিমুখ করিয়ে রীতিমতো বীরের সম্মান দিয়ে বরণ করা হয় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের তরফে। তারপর গুজরাট সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অনেকে।