দুর্নীতির অভিযোগের শীর্ষে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক, ভিজিলেন্স কমিশনের রিপোর্টে চাঞ্চল্য

মীযান ডেস্ক:  সপ্তাহ দুয়েক আগে বিরোধী জোট ইন্ডিয়া-র শরিক দলগুলোকে দুর্নীতির পাহাড় বলে কামান দেগেছিলেন। এবার এবার সেই তীর ঘুরে গেল নিজের দিকেই। না, এ অভিযোগ বিরোধীদের নয়, কেন্দ্রীয় সরকারী সংস্থার রিপোর্টেই দুর্নীতির ফলায় বিদ্ধ নরেন্দ্র মোদি সরকার। ক্যাগের পর এবার সেন্ট্রাল ভিজিলেন্স কমিশন (সিভিসি)!  মোট ১৬টি মন্ত্রকের বিরুদ্ধে এক লক্ষেরও বেশি কেলেঙ্কারির অভিযোগ। তালিকায় শীর্ষে স্বয়ং কেন্দ্র সরকারের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড হিসেবে পরিচিত অমিত শাহের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। অশ্বিনী বৈষ্ণবের রেলমন্ত্রক রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে। দুই মন্ত্রকের কর্মী-আধিকারিকদের বিরুদ্ধে অসৎ কাজের পাহাড়প্রমাণ নালিশ জমা পড়েছে ভিজিলেন্স কমিশনে। তাও মাত্র এক বছরে।
২০২২ সালের সেই অভিযোগগুলির তালিকা সিভিসি প্রকাশ করেছে তাদের সাম্প্রতিকতম বার্ষিক রিপোর্টে। তাতে দেখা যাচ্ছে, দুর্নীতি সংক্রান্ত মোট নালিশের সংখ্যা ১ লক্ষ ১৫ হাজার ২০৩। এর ৪৬ হাজার ৬৪৩টিই (৪১ শতাংশ) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিরুদ্ধে। এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনায় সোচ্চার হয়েছে বিরোধীরা। দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী বারবার বলেন, ‘না খাউঙ্গা, না খানে দুঙ্গা’। অর্থাৎ, না নিজে (ঘুষ) খাব, না কাউকে (ঘুষ) খেতে দেব। তাই এবার সিভিসি রিপোর্ট ইস্যুতে টুইটারে প্রধানমন্ত্রী মোদির ছবি দিয়ে কংগ্রেসের কটাক্ষ—‘খাউঙ্গা, আউর খানে দুঙ্গা’!
অন্যান্য মন্ত্রকের বিরুদ্ধে অভিযোগের তালিকাও নেহাৎ কম নয়। রেলমন্ত্রকের বিরুদ্ধে ১০ হাজার ৫৮০টি (৯ শতাংশ) নালিশ জমা পড়েছে। ৮ হাজার ১২৯টি অভিযোগ জমা পড়েছে সরকারি ব্যাঙ্কের কর্মীদের বিরুদ্ধে। দিল্লি সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের সংখ্যা ৭ হাজার ৩৭০টি। যদিও অভিযুক্তদের অধিকাংশই অমিত শাহের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনে কাজ করেন। কয়লা মন্ত্রকের ক্ষেত্রে অভিযোগের সংখ্যাটা ৪ হাজার ৩০৪টি।
উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় মন্ত্রক এবং প্রতিষ্ঠানগুলির কাজকর্মের উপর নজরদারি চালিয়ে দুর্নীতি দমনই মূল লক্ষ্য সিভিসির। সরকার নয়, শুধুমাত্র সংসদের কাছে জবাবদিহি করে এই স্বশাসিত সংস্থা। এছাড়া দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে শীর্ষ সরকারি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে তদন্ত চালিয়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থা বা মন্ত্রককে পদক্ষেপ করার পরামর্শও দিয়ে থাকে। রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, সেই সুপারিশ মানার ক্ষেত্রেও বড়সড় গাফিলতি করেছে একাধিক কেন্দ্রীয় সংস্থা। কোথাও কমিশনের প্রস্তাবগুলিকে সরাসরি খারিজ করা হয়েছে। কোথাও আবার ইচ্ছে করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। অনেক সময় আবার দুর্নীতিতে অভিযুক্ত আধিকারিককে অবসর নেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে।

Stay Connected

Advt.

%d bloggers like this: