মীযান ডেস্ক: বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করলেন মার্কিন কংগ্রেসের প্রতিনিধি দল। ১১ জনের এই প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে রয়েছেন আমেরিকার ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটিক পার্টির সাংসদ এড কেইস ও বিরোধী রিপাবলিকান পার্টির রিচার্ড ম্যাকরমিক। সোমবার ১৪ আগস্ট সকালে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে গিয়েছেন। এদিন বিমানবন্দর থেকে নেমে দুই কংগ্রেসম্যান কক্সবাজার শহরে অবস্থিত ইন্টার সেকশন কো-অর্ডিনেশন গ্রুপ (আইএসসিজি) কার্যালয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ঘণ্টা খানেক বৈঠক করেন।
এরপর তারা উখিয়া উপজেলার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। সেখানে গিয়ে রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প পরিদর্শনের পাশাপাশি ত্রাণ, পুনর্বাসন ও প্রত্যাবাসন কমিশনসহ অন্যান্য সংস্থাগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেন। তারা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ব্যয় বরাদ্দ খতিয়ে দেখা-সহ সামগ্রিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করবেন বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর পুলিশ ও সেনাবাহিনী লেলিয়ে দিয়ে রীতমতো রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চালায় মায়ানমার সরকার। তখন সে দেশের চালকের আসনে ছিলেন শান্তিতে নোবেলজয়ী গণতান্ত্রিক নেত্রী আউং সাং সুকি। দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে বেছে বেছে রাখাইন প্রদেশের রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর পৈশাচিক হামলা, ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া, মসজিদ মাদ্রাসা ধ্বংস করা, গণধর্ষণ ও গণহত্যা চালিয়ে চালাতে থাকে পুলিশ ও সেনাবাহিনী। নদীর জলে ভেসে যায় অসংখ্য লাশ। তারপরেও তারা ভাগ্যক্রমে কোনরকমে বেঁচেবর্তে ছিল, তাদেরকে বন্দুক উঁচিয়ে দেশছাড়া করা হয়। এহেন বর্বরতা, নারকীয়তা সত্ত্বেও শুধুমাত্র মুসলিম হওয়ার অপরাধে সুকি সরকার রোহিঙ্গাদের জান-মালের নিরাপত্তার কোনও ব্যবস্থা করেনি। শান্তিতে নোবেলজয়ী সুকি মায়ানমারে অশান্তি ও অহিংসার পূজারী হয়ে ওঠেন। যা নিয়ে বিশ্বজুড়ে ব্যাপক হইচই হলে বহু দেশ ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান সুকিকে দেওয়া পুরস্কার, সম্মান, খেতাব কেড়ে নেয়। তবুও একবারের জন্যও রাখাইনে যাননি সুকি। সেই সময় অন্তত ১০ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা প্রাণে বাঁচতে বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ প্রভৃতি দেশে পালিয়ে গিয়ে আশ্রয় নেয়। আর মাত্র ১০ দিন পরে সেই মর্মস্পর্শী অধ্যায়ের ৬ বছর পূর্ণ হতে চলেছে। কিন্তু মায়ানমারের হাজার বছরের আদি জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গারা আজও নিজ দেশে ফিরে যেতে পারেনি। বাংলাদেশ তথা প্রতিবেশি কয়েকটি মুসলিম প্রধান দেশে তারা মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে।