সাপে-নেউলে সম্পর্ক, তবুও বন্দি বিনিময় ও বাজেয়াপ্ত সম্পদ ফিরিতে দিতে মার্কিন-ইরান চুক্তি

মীযান ডেস্ক: আমেরিকা-ইরান বরাবরই সাপে-নেউলে সম্পর্ক। তবু সেই চিরশত্রুতা সত্ত্বেও চলতি সপ্তাহে যুযুধান দুই দেশ সম্ভাব্য এক চুক্তির ব্যাপারে একমত হয়েছে। ওই চুক্তির আওতায় আমেরিকা কর্তৃক জব্দ করা ইরানের শত শত কোটি ডলারের সম্পদ ফিরিয়ে দেওয়া হবে। একইসঙ্গে বন্দিবিনিময়ও করবে দুই দেশ।

মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে কয়েক মাস ধরে এ নিয়ে আলোচনার পর বৃহস্পতিবার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়। ইতিমধ্যেই ইরানে বন্দি থাকা ৫ মার্কিনিকে কারাগার থেকে সরিয়ে গৃহবন্দী রাখা হয়েছে। এদিকে মার্কিন মুলুকে বন্দী ইরানিদেরকেও মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। তবে তাঁদের সংখ্যা কত, তা জানা যায়নি। তবে বাজেয়াপ্ত অর্থের পরিমাণ প্রায় ৭০০ কোটি ডলার।

জানা গিয়েছে, আমেরিকা কর্তৃক জব্দ করা ইরানের বিপুল অর্থ দক্ষিণ কোরিয়ার ব্যাংক থেকে কাতারে পাঠানো হবে। কারণ, এই চুক্তিতে মধ্যস্থতা করছে কাতার। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি বা শেষ নাগাদ চুক্তির শর্তগুলো পূরণ হবে।

২০১৯ সালের আগে ইরান থেকে জ্বালানি তেল কিনেছিল দক্ষিণ কোরিয়া। তবে তার দাম পরিশোধ করেনি মার্কিন মিত্র দেশটি। ২০১৯ সালে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ-সংক্রান্ত লেনদেনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে ওই অর্থ আটকে যায়। সেই অর্থই বর্তমানে চুক্তির আওতায় ইরানে ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে সবুজ সংকেত দিয়েছে ওয়াশিংটন।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে বারাক ওবামার আমলে ইরানের সঙ্গে ঐতিহাসিক পরমাণু চুক্তি করে আমেরিকা-সহ রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ৫ স্থায়ী দেশ। ২০১৮ সালে ওই চুক্তি ছেড়ে বেরিয়ে যান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপর তেহরানের ওপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা দেয় ওয়াশিংটন।

এদিকে বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইরানকে আবার ২০১৫ সালে সই হওয়া পরমাণু চুক্তিতে ফিরিয়ে আনতে চাইছেন। গত বছরে ওই চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী কয়েকটি দেশ ইরানকে আবার চুক্তিতে ফিরে আসার প্রস্তাব দিয়েছিল। তবে তেহরান ওই প্রস্তাব গ্রহণ করেনি। তাদের দাবি হল, আগে সব নিষেধাজ্ঞা তুলতে হবে, তারপর আলোচনা হতে পারে। ইরান এও বলেছে, ওবামা সরকারে ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন বাইডেন। তসুতরাং পরমাণু চুক্তির নাড়িনক্ষত্র তিনি অবহিত। অতয়েব এ নিয়ে অহেতুক অজুহাত তোলা বা টালবাহানা চলবে না।

Share :

Stay Connected

Advt.

%d bloggers like this: